নিজস্ব প্রতিবেদক : “আপন মাঝে শক্তি ধরো, নিজের নিরাপত্তা বলয় নিজে গড়” এই প্রতিপাদ্য বিষয়টিকে সামনে রেখে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কিশোর-কিশোরীদের জীবন দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২৯ অক্টোবর) সাতক্ষীরা শহরের অদূরে তালতলায় সম্প্রীতি এইড ফাউন্ডেশন এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। সম্প্রীতি এইড ফাউন্ডেশনের হলরুমে অনুষ্ঠিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আর্থিক সহায়তা প্রদান করছেন “স্থানীয় উদ্যোগে কানাডীয় তহবিল” কানাডা হাই কমিশন বাংলাদেশ। প্রশিক্ষণে সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সম্প্রীতি এইড ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও হেড সংস্থার নির্বাহী পরিচালক লুইস রানা গাইন, গোপীনাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্র নাথ কর্মকার ও দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরা পত্রিকার উপ-সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। সমাপনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি’র সহকারী পরিচালক মলি মন্ডল। প্রশিক্ষণে সম্প্রীতি বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী কল্যাণ বিদ্যালয়ের ৩০ জন কিশোর-কিশোরী অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সম্প্রীতি বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী কল্যাণ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আছাদুল ইসলাম। প্রশিক্ষণে প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সম্প্রীতি’র প্রোগ্রাম অফিসার রেহেনা পারভীন এবং ইশারা ভাষায় বুঝিয়ে দেন সম্প্রীতি বাক-শ্রবণ প্রতিবন্ধী কল্যাণ বিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক শাপলা সরকার, শৈব্যা মন্ডল ও দিপা মন্ডল। প্রশিক্ষণের মূল আলোচিত বিষয় ছিল- প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য, জীবন দক্ষতা কি? বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক শনাক্তকৃত ১০টি মূল জীবন দক্ষতা, জীবন দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষার বিষয়বস্তু, মাদক দ্রব্য, মাদক দ্রব্য সেবনের জন্য বন্ধু-বান্ধব ও অন্যান্যদের চাপ প্রতিহত করার উপায়, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যরক্ষা, এইচআইভি/এইডস, বয়োঃসন্ধিকাল ও প্রজনন স্বাস্থ্য, অনাকাক্সিক্ষত স্পর্শ (ভাল স্পর্শ, মন্দ স্পর্শ), ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, ইভটিজিং এর প্রতিকার, প্রযুক্তির অপব্যবহার, মূল্যায়ন, মতামত ও পরামর্শ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন বিশেষ কিছু পদ্ধতি অনুসরণে, পদ্ধতিগুলো হলো বক্তব্য, পেয়ার গ্রুপ, ব্রেইন স্টর্মিং, নাটক/অভিনয়, প্রশ্নোত্তর, বড় দলীয়, ছোট দলীয়, ব্যক্তিগত প্রতিভা প্রদর্শন ও আলোচনা পদ্ধতি অনুসরণে। সমাপনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে অতিথিবৃন্দ কিশোর-কিশোরীদের নিরাপত্তার বিভিন্ন কৌশল শিখিয়ে দেন এবং যে কোন প্রয়োজনে তাদের পাশে থাকার আশ্বাস প্রদান করেন।
তারা প্রকল্পে আর্থিক অনুদান প্রদানের জন্য কানাডা হাইকমিশন বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সমাপনী বক্তব্যে সম্প্রীতি’র সহকারী পরিচালক মলি মন্ডল এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জীবন দক্ষতা ও মান উন্নয়নে উদ্ধুদ্ধকরণে কার্যকরী দিক নির্দেশনা প্রদান করেন, ব্যাপক পরিসরে প্রকল্পের আদর্শ, উদ্দেশ্য সকল শ্রেণির মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের অধিকার, মৌলিক চাহিদা, নিরাপত্তা ও জীবন দক্ষতা উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সকলকে পরামর্শ প্রদান করেন। পরিশেষে সম্প্রীতি’র মিশন, ভিশন ও গোল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং প্রশিক্ষণ থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান নিজ নিজ জীবনে কাজে লাগানোর পরামর্শ প্রদান করেন। তিনি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি প্রকল্পে আর্থিক অনুদান প্রদানের জন্য কানাডা হাইকমিশন বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রশিক্ষণটি প্রশিক্ষক হিসেবে পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন সম্প্রীতি’র প্রোগ্রাম অফিসার রেহেনা পারভীন।