কলারোয়া ডেস্ক : ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। কিন্তু সেই খুশির ঈদ আনন্দ অনেকটা ম্লান হয়ে পড়েছে কলারোয়া উপজেলার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের। এমপিওভূক্ত শিক্ষকরা নামমাত্র বোনাস পেলেও মূল বেতন-বোনাস না পাওয়ায় ঈদেরর খুশি-আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নন-এমপিওভূক্ত শিক্ষকরা। দিনের পর দিন বেতনভাতা না পেয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এসকল শিক্ষক সমাজ। সেই আর্তনাদে যোগ হয় ঈদ-পার্বনের সময়।
উপজেলার শিক্ষকদের প্রতিবাদ, ফরিয়াদ কিংবা আর্তনাদ-কোনটাই শুনবার যেন কেউ নেই। এত স্মারকলিপি, মানববন্ধন, সভা, সমাবেশ, কিছুতেই আজও কারো কর্ণপাত নেই, নেই কোন কার্যকর প্রদক্ষেপ নেয়ারও।
একজন শিক্ষকের কথা লক্ষ মানুষে শুনে থাকে। লক্ষ শিক্ষকের কথা এক-দু’জন মানুষে শোনে না! শোনে না তাদের বেতন-বোনাস না পাওয়ার আর্তনাদ।
পৃথিবীর আর কোনো দেশে শিক্ষকরা এত নিগৃহীত কীনা সন্দেহ। আশ্চর্য একমাত্র আমাদের শিক্ষকদের যত দুর্দশা ও দুর্ভোগ।
নন-এমপিও অনেক শিক্ষক বিনা বেতনে শিক্ষকতা করেন। দিনের পর দিন পাঠদান করে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় পাস করিয়ে দিচ্ছেন, সেই শিক্ষার্থীরা সরকারি-বেসরকারি চাকরি কিংবা ব্যবসা করে আয় রোজগার করছেন কিন্তু শিক্ষকরা বিনা বেতনে রয়েছেন এখনো। সেই কষ্টের সাথে বিষফোড়া হয়ে ওঠে ঈদের সময়।
এমপিও ভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ১হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া, ৫’শত টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং বেতনের ২৫% মাত্র ঈদে বোনাস পেয়ে থাকেন। তারা ইনক্রিমেন্ট ও বৈশাখি ভাতার জন্য শত আন্দোলন করেন। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের হৃদয় এতটুকু বিগলিত হয় না।
চলতি রমজানের শেষে ঈদুল ফেতরের শুভাগমন। মুসলমানদের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসব। সবচেয়ে আনন্দের দিন। কিন্তু দিনটি নিরানন্দে কাটে এখানকার বেসরকারি শিক্ষকদের। আনন্দের জায়গায় থাকে দীর্ঘশ্বাস। পরিজনের মুখে হাঁসি ফুটাতে না পারার কষ্ট।
আবার কারো কারো কোন বোনাসই নেই। কারো কারো সিকি বোনাস।
শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, আর সেই শিক্ষাদানে যারা অবিরত পেশায় নিয়োজিত তারা বিনা বেতনে কিংবা বেতনভূক্ত হয়েও যতসামান্য বোনাসে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে বাধ্য হচ্ছেন। আনন্দের ঈদে মানসিক নিরানন্দে এমপিওভূক্ত ও নন-এমপিওভূক্ত শিক্ষকরা। এ দুঃখ কষ্টের শেষ কবে হবে বাংলাদেশে তা যেন কেউ জানেন না। তবু আশার দোলাচলে এ সকল শিক্ষকরা।
পূর্ববর্তী পোস্ট