বাংলাদেশে রাষ্ট্রের চেয়ে বিভিন্ন সংস্থার শক্তিশালী হয়ে উঠাকে ‘অশুভ লক্ষণ’ বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, “ডাক্তার অবাধ্য, ম্যাজিস্ট্রেট অবাধ্য, শাস্তি দেওয়া যায় না। অবরোধ করে বসে। এভাবে ডিপার্টমেন্ট জিতে যায়।”
রোববার চট্টগ্রাম জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় কর্মস্থলে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির বিষয়ে কয়েকজন জনপ্রতিনিধির অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, “রাষ্ট্র দূর্বল, সংস্থা শক্তিশালী; এটা অশুভ লক্ষণ। হওয়া উচিত রাষ্ট্র শক্তিশালী, সংস্থাগুলো রাষ্ট্রের সাবোর্ডিনেট (অনুগত)।”
সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, “আমার উপজেলায় ডাক্তার আছেন ৩০ জন, কিন্তু কর্মস্থলে তাদের পাওয়া যায় না।
“অনুপস্থিতির বিষয়ে অভিযোগ দিলে সিভিল সার্জন বিএমএ’র (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন) ভয়ে কোনো ব্যবস্থা নেন না।”জেলা প্রশাসককে তার এলাকা (রাঙ্গুনিয়া) সরেজমিনে ঘুরে দেখে অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানান মোহাম্মদ আলী শাহ।
কর্ণফুলী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান উদ্দিন মুরাদও একই ধরনের অভিযোগ করেন।“আমার উপজেলায় পাঁচজন ডাক্তারের মধ্যে একজন প্রেষণে পটিয়া উপজেলায় থাকলেও বাকি চারজন ডাক্তার কর্মস্থলে অসেন না। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর থাকলেও তাদের কাউকে কর্মস্থলে পাওয়া যায় না।”
কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা, জুলধা, চরপাথরঘাটা ও শিকলবাহায় ওই চার চিকিৎসকের কর্মস্থল হলেও তাদের কেউ সেখানে যান না বলে অভিযোগ এই সরকারি কর্মকর্তার।
পরে সভায় উপস্থিত চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন মো. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, “ঈদের পরপরই আমি সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে বসব। সমস্যাগুলো সমাধানে করণীয় নির্ধারণ করে দেব।”
তিনি চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে বিএমএ’র চাপের বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেন।
তখন জিল্লুর রহমান চৌধুরী জনগণকে সেবা দিতে যারা অবহেলা করবে তাদের বিরুদ্ধে ‘কঠোর’ হতে সিভিল সার্জনকে পরামর্শ দেন।