নিজস্ব প্রতিনিধি ঃ সাতক্ষীরায় এক শিক্ষককে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানোর প্রতিবাদ,নিঃশর্ত মুক্তি ষড়যন্ত্রকারীদের শাস্তিমূলক শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনয়নবাসীর ব্যানারে মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় তালা উপজেলা পরিষদের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মহান্দি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবঃ প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাওখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবঃ প্রধান শিক্ষক রণজিৎ ঘোষ, জেঠুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সনজিত দেবনাথ, কারাবন্দী সুভাষ দাসের মেয়ে বাওখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক রেখা দাস,তার বোন রমা দাস, মানবাধিকার কর্মী রঘুনাথ খাঁ, গনেশ দাস,জ্যোতিষ দাস, বিষ্ণুপদ দাস,মন্টু দাস,ভবেন দাস,সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত বছরের ১৬ জানুয়ারি ফতেপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সুভাষ দাসের মেয়ে রমা দাসকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে চাকুরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এক লাখ টাকা নেন ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইষ্টম দাস। চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত চাইলে ইষ্টম দাস ও তার স্ত্রী অঞ্জলি দাসের সঙ্গে সুভাষ দাসের সম্পর্কের অবনতি হয়। ১০ মার্চ সকালে প্রধান শিক্ষকের অফিসকক্ষে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে সুভাষ দাসকে পেটান ইষ্টম দাসের কাছের লোক আকাশ দাস। এঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়ে তালা হাসপাতালে ভর্তি হন সুভাষ দাস। এ মামলা থেকে ইষ্টম দাস ও আকাশ দাস বাঁচার জন্য সুভাষ দাস গত ৭ মার্চ সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ২৫ জন শিক্ষকের সাথে গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কাউটের রিহার্সালে থাকার পরও ওইদিন দুপুর সোয়া ১২ টায় আকাশ দাসের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগে ১৫ নভেম্বর রাত ১১ টায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরদিন মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়। এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে সুভাষ দাসকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। একইসাথে ষড়যন্ত্রকারি ইষ্টম দাস,অঞ্জলী দাস ও তাদের দোসর আকাশ দাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ইষ্টম দম্পতির বিরুদ্ধে এলাকার বহু মানুষের কাছ থেকে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে কোটি কোটও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
তবে আকাশ দাস জানান,তার মেয়েকে শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করতে যেয়ে ১০ মার্চ সুভাষ স্যারের সাথে তার ধ্বস্তাধস্তি হয়।
তবে ইষ্টম দাসকে বাড়িতে পাওয়া না গেলে তার স্ত্রী অঞ্জলি দাস বলেন,আকাশ দাস বিদ্যালয়ের মধ্যে সুভাষ দাসকে তিন চারটি থাপ্পড় মেরেছিল। কয়েকটি মামলা থাজায় ইষ্টম দাস পালিয়ে ঢাকায় আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, শ্লীলতাহানির বিষয়টি আকাশ দাস জানে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার তালা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গাজী শফিকুল ইসলাম বলেন, ৭ জানুয়ারি গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালযে সরকারি প্রোগ্রামে উপস্থিত থাকার বিষয়টি ২৫ জন শিক্ষকের কাছ থেকে জেনে সুভাষ দাসের পক্ষে গত ২৫ মার্চ তিনি একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে মারপিটের ঘটনায় আকাশ দাসের বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছিলন তিনি।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান,তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।