নিজস্ব প্রতিনিধি : জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে তরুণদের উদ্ভাবনী উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত হলো “গ্রীন ইনোভেশন ফেয়ার ২০২৫” বা সবুজ উদ্ভাবন মেলা।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা শহরের তুফান কনভেনশন সেন্টার (লেকভিউ)-এ এ আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিডো , একশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় এফওআরটি প্রকল্পের আওতায়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিডোর প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাস। প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. বদরুদ্দোজা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক সঞ্জীত কুমার দাশ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাজমুন্নাহার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মুনির হোসেন, সমাজসেবা অফিসের সহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান, টিটিসি সাতক্ষীরার অধ্যক্ষ অপু হালদার, জেলা দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ডা. আবুল কালাম বাবলা, জেডিএফ সভানেত্রী ফরিদা আক্তার বিউটি, স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধব দত্ত, প্রথম আলোর সিনিয়র সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জিসহ বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ।
মেলায় ১৫টি স্টলের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব উদ্যোক্তারা তাঁদের উদ্ভাবন তুলে ধরেন। প্রদর্শিত উদ্ভাবনের মধ্যে ছিল- প্লাস্টিকের বেতি দিয়ে ঘরের সিলিং, বেড়া ও ঝুড়ি তৈরি, ধোঁয়াবিহীন ইকোব্রিক, ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন, ছাদকৃষি, বাঁশ ও পাটের তৈরি সামগ্রী, চিপসের মোড়ক দিয়ে মাদুর, মাশরুম চাষ, বস্তায় আদা চাষ, অর্গানিক সবজি উৎপাদন, পানিশোধন প্রকল্প, নিমপাতা ও কাঁচা হলুদ দিয়ে সাবান ও তেল তৈরি ইত্যাদি।
মেলায় উপস্থিত বক্তারা বলেন, দ্রুত নগরায়ন, শিল্পায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর চাপ বেড়েছে। এই সংকটে তরুণরাই হয়ে উঠছে পরিবর্তনের চালিকাশক্তি। তারা স্থানীয়ভাবে পরিবেশবান্ধব সমাধান তৈরি করে টেকসই উন্নয়নের অনুশীলন ছড়িয়ে দিচ্ছে।
সিডোর প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাস স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “এই আয়োজন তরুণ উদ্ভাবকদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে তারা নিজেদের কাজ প্রদর্শন, অভিজ্ঞতা বিনিময় ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ পাচ্ছেন।”
একশনএইড বাংলাদেশের সিনিয়র অফিসার মাহিনুর রহমান মেলার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।
সাতক্ষীরা ইয়ুথ হাবের সভাপতি সাকিব হাসান সবুজ উদ্যোক্তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।
দিনব্যাপী আয়োজনে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে তিনজনকে বাছাই করা হয়, যারা পরবর্তীতে জাতীয় পর্যায়ে “গ্রীন ইনোভেশন ফেয়ার”-এ তাঁদের প্রোডাক্ট প্রদর্শনের সুযোগ পাবেন। অংশগ্রহণকারী প্রতিটি স্টলকেও পুরস্কার প্রদান করা হয়।
বক্তারা বলেন, এই ধরনের উদ্যোগ তরুণদের আত্মবিশ্বাস ও নেতৃত্বগুণ বাড়িয়ে তুলবে, পাশাপাশি টেকসই ও সবুজ অর্থনীতির পথে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নেবে।

