ডেস্ক রিপোর্ট : বরগুনার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনের একমাত্র পুত্রসন্তান ঈশান। বয়স পাঁচ বছর ছুঁই-ছুঁই। কয়েকদিন আগে টিভি পর্দায় বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে দেখে তার মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সে তার মা তনুকে প্রশ্ন করেছে, ‘আমার বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে কেন? বাবা কি দুষ্টু?’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া আবেগপ্রবণ এক স্ট্যাটাসে এই তথ্য জানান সালমন। সোমবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এটি পোস্ট করেন তিনি। ঈশানের এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন উল্লেখ করে পরোক্ষভাবে নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ, মামলা ও পুলিশি পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানালেন বরগুনার ইউএনও।
তার লেখাটা এমন— ‘ঈশান একটা প্রশ্ন করেছে তার মাকে। যে প্রশ্নের উত্তর এখনও পায়নি সে। টিভি পর্দায় সে দেখেছে যে তার বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। সে জানে, পুলিশ দুষ্টু লোকদেরই ধরে শুধু (কারণ সে মাঝে মধ্যে ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে সনি এইট চ্যানেলে)। ঈশান জিজ্ঞাসা করেছে তার মাকে, ‘আমার বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে কেন? বাবা কি দুষ্টু?’। তনু, আমার স্ত্রী, এই প্রশ্নটির জবাব দিতে পারেনি তার ছেলেকে এখনও। এই প্রশ্নের উত্তরটি আমরা খুঁজছি।”
৩ ঘণ্টার ব্যবধানে সালমনের স্ট্যাটাসে লাইক পড়ে সাড়ে ৭০০০’রও বেশি। এটি শেয়ার করেছেন প্রায় ৫০০ জন ফেসবুক ব্যবহারকারী। এছাড়া কমেন্ট করেছেন ৯৫৭ জন।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে পঞ্চম শ্রেণির এক শিশুর আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবি ছেপে অবমাননার অভিযোগে বরগুনার ইউএনও সালমনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন বরিশাল আইনজীবী সমিতির সভাপতি সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু। এ কারণে তার হাতে হাতকড়াও পরানো হয়।
বরিশালের আইনজীবী সমিতির সভাপতি ওবায়েদ উল্লাহ সাজু বাদী হয়ে গত ৭ জুন তৎকালীন আগৈলঝাড়ার ইউএনও এবং বর্তমানে বরগুনার ইউএনও গাজী তারেক সালমনের বিরুদ্ধে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেন। ওইদিন মামলা আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে সমন জারির আদেশ দেন। ১৯ জুলাই হাজির হলে তাকে জামিন দেন আদালত।
শিশুর আঁকা জাতির জনকের ছবি ব্যবহার করে কার্ড ছাপানোর কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাজেহাল হওয়ায় ভীষণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশে অ্যাডভোকেট ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে আওয়ামী লীগের বরিশাল জেলা শাখার ধর্মষিয়ক সম্পাদকের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। রবিবার তিনি মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।