মাহফিজুল ইসলাম আককাজ: দেশের সরকার প্রধান প্রাণান্তকর চেষ্টা করছেন সাধারণ দরিদ্র মানুষকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে সেবা দিতে। আর তার সরকারের অফিসগুলোতে ঘাপটি মেরে আছে অসংখ্য দুর্নীতিবাজ, যারা তার প্রশংসনীয় উদ্যোগগুলোর সেবা নিতে সাধারণ মানুষকে করছেন হয়রানি। এমনটাই ঘটেছে ১০ টাকা কেজিতে দরিদ্র মানুষের কাছে চাউল পৌছে দেয়ার প্রধানমন্ত্রীর মহতি উদ্যোগের ক্ষেত্রেও। তিনি চাউলেও অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতির কারণে কেজি প্রতি চাউলের প্রকৃত মূল্য বেড়ে যাচ্ছে, বাড়ছে হয়রানি।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে ডিলাররা। ব্যাহত হচ্ছে খাদ্য শষ্য বিতরণ ব্যবস্থা। ডিলার নিয়োগে অর্থ-বাণিজ্য, ওজনে কম ও চাউল উত্তোলনে মোটা অংকের উৎকোচ দিতে হচ্ছে ডিলারদের। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেশের হতদরিদ্রদের ১০টাকা কেজিতে চাউল বিতরণের কার্যক্রম শুরু হলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সেটিকে পুঁজি করে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা খাদ্য অফিসের কিছু অসাধু অর্থলোভী কর্মকর্তারা। ডিলার নিয়োগের নামে তারা হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এর পরেও থেমে নেই খাদ্য গুদামে চাউল উত্তোলনে অনিয়ম ও দুর্নীতি। রেশন কার্ড অনুযায়ী ১৫ থেকে ১৮ টন পর্যন্ত চাউল পাবে একজন ডিলার। খাদ্য গুদামে চাউল উত্তোলনের আগে ফুড অফিসের কর্মকর্তাদের দিতে হচ্ছে টন প্রতি ১৫০টাকা, খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাদের টন প্রতি দিতে হচ্ছে ১২০টাকা, কুলিদের দিতে হচ্ছে ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা। এর পরেও প্রতি বস্তায় ওজনে কম দিচ্ছে ১ থেকে ২ কেজি। কাউকে তোয়াক্কা না করে এ ধরনের দুর্নীতি অনিয়ম করে যাচ্ছে সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান ও তার অফিস। একদিকে যেমন হয়রানীর শিকার হচ্ছে হতদরিদ্র মানুষ, অপরদিকে ডিলাররা পড়েছে বিপাকে। এসব দুর্নীতিবাজদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে ডিলাররা। তাই ওজনে কম দিতে শুরু করেছে ডিলাররা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডিলার জানান, “ফুড অফিস ও সরকারি খাদ্য গুদামে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির কারণে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। টাকা না দিলে ওজনে কম ও লাইসেন্স বাতিল হতে পারে। অনেক টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স পেয়েছি। জানিনা কপালে কি আছে? এসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হচ্ছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ৩০ কেজি চাউলে ২ থেকে ৩শ’ গ্রাম চাউল ওজনে কম দিতে বলেছে। তাহলে পুষিয়ে যাবে বলে আশ্বাস্ত করেছেন ঐ খাদ্য কর্মকর্তা। এ ব্যাপারে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু জানান, “ইতিপূর্বেও তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগের কথা শোনা গেছে। আপদমস্তকে দুর্নীতিতে ভরা।”
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মনিরা পারভীন জানান, “এ ধরনের অভিযোগের বিরুদ্ধে আপনারা সংবাদ প্রকাশ করুন। এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাহিলে তিনি বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী ডিলার নিয়োগ দিয়েছি। অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও ওজনে কম দেওয়ার বিষয়টি আমার কাজ নয়। খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা করুন। তবে উনিশ-কুঁড়ি একটু হয়।
পূর্ববর্তী পোস্ট