অপ্রতিম রহমান : মুক্তামনির হাতে আরও ছয়টি অস্ত্রোপচার করা লাগবে বলে জানিয়েছেন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেন। শনিবার সকালে অপারেশনের পর পুরো প্রক্রিয়া নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ও বার্ন ইউনিটের পরিচালক ডা. আবুল কালাম।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে মুক্তামনির অস্ত্রোপচার শুরু হয়। ২০ জন চিকিৎসকের একটি দল অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচার করে তার হাত থেকে তিন কেজি মাংসপিণ্ড ফেলে দেওয়া হয়েছে। এগুলো পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
ডা. সামন্ত লাল বলেন, ‘অপারেশনের সফল হয়েছে। মুক্তামনি ভালো আছে। তার হাতের ডিজিজ পোরশন (রোগাক্রান্ত অংশ) কেটে ফেলতে আমরা সক্ষম হয়েছি। তবে এক অপারেশনেই এটা শেষ হবে না। আরও অন্তত ছয়টি অপারেশন করা লাগবে। আর জ্ঞান ফিরেছে, কথা বলেছে। এ সাফল্য আমাদের একার না। বার্ন ইউনিটসহ জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউ (এনআইসিভিডি) সমন্বিত সফলতা এটা। তার হাত ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে। প্রাথমিক সাফল্য বললেও এটা এখানেই শেষ নয়। ইটস লং ওয়ে টু গো।’
ঝুঁকি ও রক্তক্ষরণের আশঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঝুঁকিমুক্ত কখনোই বলা যাবে না। ডেফিনেটলি ঝুঁকি কমে এসেছে।
ভয় রয়েছে কিনা-জানতে চাইলে বার্ন ইউনিটের পরিচালক ডা. আবুল কালাম বলেন, ‘ডেফিনেটলি আছে।’
মুক্তামনির আবারও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তার হাতের বেশিরভাগ অংশটুকু ফেলে দিয়েছি। আপনারাও জানেন ওর শরীরের বেশ কিছু অংশে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। সেগুলো আমরা রিমুভ করবো। আমরা এটুকু বলতে পারি, হাতের রোগাক্রান্ত যেটুকু অংশ ফেলে দিয়েছি সেখানে আর এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।’
মুক্তামনি কেমন আছে এ প্রশ্নের জবাবে ডা. আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা যতটা প্রত্যাশা করেছিলাম মুক্তামনি তার থেকেও ভালো আছে। তবে সে ঝুঁকিমুক্ত না। অন্তত ৫-৬ সপ্তাহ সে আমাদের অবজারভেশননে থাকবে।’
পরবর্তী অস্ত্রোপচার কবে হবে-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একেকজন মানুষের শরীরের মেকানিজম একেক রকম। ওর একটা অপারেশন হয়েছে। শরীরের কিছু ডিঅ্যারেজমেন্ট আছে। ওর শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করবে পরবর্তী অপারেশন কবে করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক ড. জুলফিকার লেনিন বলেন, ‘মুক্তামনির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সব সময় খোঁজখবর রেখেছেন। তিনি আজকের বিষয়ও সব কিছু জানেন। আমাদের দিক থেকে যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।’