দুই সপ্তাহ ধরে চলছে প্রবল বৃষ্টিপাত। মধ্যে কেবল একদিন থেমেছিল। আর অস্বাভাবিক এই বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা পানিতে আক্ষরিক অর্থেই ভেসে গেছে ভারতের বিহার রাজ্য।
বিহারের গ্রাম ও শহর সবই এখন পানিতে ডুবে আছে। রাজ্যের প্রধান নদী কোশি ও মহানন্দার পানি বিপৎসীমা পেরিয়েছে বহু আগেই। একের পর এক ভেঙে পড়েছে লোকালয় রক্ষা বাঁধ।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে বন্যার পানির তোড়ে চোখের সামনে স্বজনকে ভেসে চলে যেতে দেখেও অনেকে কিছু করতে পারেননি। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিই এখন ভারতের বিহার রাজ্যে।
কেবল সরকারি হিসাবেই বিহারের বন্যায় সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০ জনে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বিহারে বেড়েই চলছে মৃতের সংখ্যা। রাজ্যটির ১৮টি জেলার প্রতিটি থেকে বন্যায় মৃতের খবর এসেছে। এর মধ্যে আররিয়া জেলায় মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত সেখানে নিহত হয়েছেন ৭৮ জন। এ ছাড়া সীতামারিতে ৪২, চম্পারনে ৩১, কাটিহারে ২৬, মধুবনিতে ২৫, সুপুলে ২১, দারভাঙা জেলায় ১৯ ও সারান জেলায় ছয়জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর। রাজ্যটির প্রত্যন্ত ও পাহাড়ি এলাকায় মানুষ মারা গেছে বেশি।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী বিহার রাজ্যের ১৮ জেলার প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষ বন্যার কবলে। তাদের মধ্যে প্রায় আট লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে বিভিন্ন আশ্রয়শিবির ও নিরাপদ আশ্রয়ে গেছেন। মানবেতর অবস্থায় আছে আরো অন্তত ৩০ লাখ মানুষ। পরিস্থিতি মোকাবেলায় রাজ্যে মোট সাড়ে তেরশ ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে।
এদিকে, ভয়াবহ এ বন্যার পর বিভিন্ন এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। হেলিকপ্টারে করে দুর্গতদের অবস্থা দেখে গেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। এ দুর্যোগে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।