শিরোনাম দেখে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে গোশত কী করে এত কম দামে বিক্রি হয়? গরু কেনা থেকে শুরু করে হাসিল পরিশোধ এবং কসাইয়ের মজুরি দেয়ার পর কোরবানির গোশতের মূল্য দাঁড়ায় কেজি প্রতি সাতশ’ থেকে আটশ’ টাকা। অথচ সেই গোশতই এখন হাত ঘুরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা দরে।
রাজধানীর সূত্রাপুর, ধোলাই খাল, খিলগাঁও, রামপুরা, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে এ দৃশ্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। মূলত সকাল থেকে ভিক্ষুক এবং দুস্থ মানুষেরা বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে যে গোশত সংগ্রহ করেছেন সেটাই তারা এসব স্থানে বিক্রি করছেন। আর এ সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন কিছু অসাধু মৌসুমী ব্যবসায়ী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রাপূরের এক হালিম ব্যবসায়ী বলেন, দোকান থেকে গোশত কিনতে গেলে কেজি প্রতি কমপক্ষে ৪৫০ টাকা লাগে। তাই এ সময় কমদামে কিছু গোশত সংগ্রহ করে রাখছি।
ঠিক একই কথা বললেন খিলগাঁওয়ের এক তেহারী ব্যবসায়ী। তিনি তেহারির গোশত হিসেবে এগুলো সংগ্রহ করে রাখছেন।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসব গোশতের দাম উঠানামা করছে। অর্থাৎ হাড়ের পরিমাণের ওপর নির্ভর করছে এসব গোশতের মূল্য। তাই কোথাও দুইশ’ টাকা কোথা ও আড়াইশ’ টাকা।
সূত্রাপুর কমিউনিটি সেন্টারের বিপরীতে এরকম এক গোশত বিক্রেতা বলেন, এসব গোশত রান্না করে খাওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই। তার চেয়ে বরং ৩/৪ কেজি মাংস বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় সেটা দিয়ে চার দিন সংসার চালানো যায়।
এদিকে, এসব গোশত মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যাওয়ায় গোশতের মান প্রশ্ন থেকেই যায়। কারণ বিভিন্ন বাসাবাড়ি থেকে বিভিন্ন রকমের গোশত একত্রিত করে বিক্রি করা হচ্ছে কেজি দরে। অথচ ঠিকমতো সংরক্ষণ করা হয়নি এসব গোশত।
পুষ্টিবিদদের বক্তব্য, খুব সকাল থেকে সংগ্রহ করা হয় এসব গোশত। দীর্ঘ সময় পার হলেও তা সংরক্ষণে কোনো স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা নেয়া হয় না। ফলে এসব গোশতে বিভিন্ন ধরনের জীবানু ও ব্যকটেরিয়া আক্রমণ করে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রশ্নটি থেকেই যায়।