নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা জেলার মাসিক আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সুষ্ঠুভাবে শারদীয় দূর্গা পুজা উদযাপনে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি সভার সিদ্ধান্ত পরবর্তী সভায় লিপিবদ্ধ করে সদস্যদের দেওয়া, আশাশুনিতে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ, বিদ্যুতের লোডশেডিং নিরসন, যানজট নিরসন, জঙ্গি তৎপরতা রোধ সংক্রান্ত, রাস্তাঘাট সংস্কার সংক্রান্ত, সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃঢ়তায় বর্তমানে জেলায় নাশকতাকারী জামাত-শিবির চক্র এবং জঙ্গিবাদ দমন করা গেলেও কিছু অত্যুৎসাহী পুলিশ সদস্যের কারণে বর্তমান সরকার ও আ ’লীগের ভাবমূর্তি জনগণের নিকট প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে মত প্রকাশ করা হয়। জেলার সর্বত্র আ ’লীগের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে অহেতুক সাধারণ মানুষকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও আটকের বিষয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানানো হয়।
এছাড়াও সভায় সাতক্ষীরা পৌরসভা কর্তৃক অবৈধভাবে অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা নিয়ে ইজিবাইক চালকদের নিবন্ধন দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এ ব্যাপারে বিআরটিএ সাতক্ষীরা সার্কেলের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ চৌধুরী বলেন, ইজিবাইক রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে বিআরটিএর কোন অনুমোদন নেই। এটা অবৈধ যানবাহন। এটা যদি কেউ রেজিস্ট্রেশন দেয় তাহলে আইনগতভাবে বিআরটিএ দায়ী থাকবে না। সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা।
জেলার থানা ওয়ারী মামলা অনুযায়ী আগস্ট ২০১৭ মাসে মামলা হয়েছে ২শ’ ২৬টি।
এদিকে, জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই কমিটির সভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের অনেকেই অনুপস্থিত থাকায় প্রশ্ন উঠেছে এই সভা তার গুরুত্ব হারাচ্ছে কিনা। গতকালের সভায় জেলার ৭টি উপজেলা পরিষদের ৫জন চেয়ারম্যানই অনুপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত দুই উপজেলা চেয়ারম্যানের একজন আবার সভার শুধুমাত্র শেষ ১৫ মিনিট উপস্থিত ছিলেন। ৭জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অর্ধেকের বেশি জন অনুপস্থিত ছিলেন। সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়ায় অবশ্য কমিটির কোন উপদেষ্টা অর্থাৎ সংসদস সদস্যদের কেউই উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া জেলা শিল্প ও বণিক সমিতিসহ একাধিক সংগঠনের কোন প্রতিনিধিই একাধিক সভায় অনুপস্থিত ছিলেন বলে সভার একাধিক সদস্য আমাদেরকে নিশ্চিত করেছেন।
এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সভায় অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সদস্য আমাদেরকে বলেন, “প্রায় প্রতিটি সভায়ই একই ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই বাস্তবায়িত হয় না। এমনও হচ্ছে যে, কোন একটি বিশেষ বিষয়ে টানা কয়েকটি সভায় বারবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এটিও সভায় অনেকের অনুপস্থিত থাকার অন্যতম কারণ।”
গতকালের সভায় বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুল হান্নান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল লতিফ খান, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর বিশ^াস সুদেব কুমার, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল খালেক, অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার কে.এম আরিফুল হক, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. তাওহীদুর রহমান, সাতক্ষীরা এনএসআইয়ের উপ-পরিচালক মো. মোজাম্মেল হক, তালা উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ, কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ স্বপন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল বারী, দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজ আল আসাদ, কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মাঈনুদ্দিন, তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদ হোসেন, বিআরটিএ সাতক্ষীরা সার্কেলের সহকারী পরিচালক তানভীর আহমেদ চৌধুরী, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি জিয়াউদ্দিন আহমেদ, সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার রবীন্দ্রনাথ দাস, সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপদের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন, জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম ছায়েদুর রহমান, জেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার অলোক কুমার তরফদার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আতিকুল হক, সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ চৌধুরী, বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ জেলা সভাপতি মনোরঞ্জন মুখার্জী, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি বিশ^জিৎ সাধু, পৌর কাউন্সিলর জ্যোৎন্সা আরা, পৌর কাউন্সিলর শেখ আব্দুস সেলিম, জেলা আনসার ভিডিপি’র জেলা কমান্ডিং প্রতিনিধি নুর ইসলাম কাগজি প্রমুখ।
পূর্ববর্তী পোস্ট