এম বেলাল হোসাইন : সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে সেবাগ্রহিতা ও বিভিন্ন অংশীজনের মুক্ত সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকালে সদর হাসপাতালের সভাপক্ষে অনুষ্ঠিত মুক্ত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান। সনাক’র পক্ষ থেকে স্বাগত ও সভার উদ্দেশ্যে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জী। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ফরহাদ জামিল। সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক) সাতক্ষীরা’র আয়োজনে “চাই স্বাস্থ্যখাতে স্বচ্ছাতা ও জবাব দিহিতা” শ্লোগান নিয়ে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন টিআইবি সাতক্ষীরা’র এরিয়া ম্যানেজার আবুল ফজল মোঃ আব্দুল আহাদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন,সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. কাজী হাবিবুর রহমান,প্রফেসর আব্দুল হামিদ, সাংবাদিক আনিসুর রহিম, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ,স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির আহবায়ক ডা. সুশান্ত কুমার ঘোষ, সনাক সভাপতি কিশোরীমোহন সরকার, এড. ফাহিমুল হক কিসলু, চারুকলা এসোসিয়েশনের সভাপতি এম এ জলিল, উন্নয়নকর্মী মাধব দত্ত, অধ্যক্ষ শিবপদ গাইন,সুন্দরবন ব্লাড ডোনেশন সোসাইটির মহিবুল্লাহ, হাসানুজ্জামান ও কয়েকজন ভুক্তভোগী সেবাগ্রহণকারী।
এসময় বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সাতক্ষীরাবাসীর স্বাস্থ্য সেবার নিশ্চিত করার একমাত্র প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিভিন্ন কারণে আজ সাতক্ষীরাবাসী হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
হাসপাতালের চিকিৎসরা আজ তাদের ক্লিনিকের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। এমন অভিযোগ রয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসক রোগী দেখার পর তাকে কিছু রিপোর্ট পরীক্ষা করা দরকার। কিন্তু ওই পরীক্ষাগুলো করার জন্য তার ক্লিনিকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। যদি ওই রোগী অন্যস্থান পরীক্ষা করেন তাহলে তার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার সাথে সাথে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। হাসপাতালে ঔষুধের সরবরাহ নেই বলে ঔষধ কেনার জন্য আদায় করা হয় টাকা। মাঝে মাঝে রিসিভ ছাড়াও টাকা নেওয়া হয়। এছাড়াও বর্হিবিভাগে রোগীদের জন্য কোন শৃঙ্খলা নেই। দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের উপর প্রভাব খাটিয়ে অনেকেই লাইনে না দাড়িয়ে সেবা গ্রহণ করছেন। হাসপাতালে দামি দামি মেশিন ও যন্ত্রপাতি থাকার পরও অনেক চিকিৎসক লাভের আশায় রোগীদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ফরওয়ার্ড করে থাকেন। যা খুবই দু:খ জনক ঘটনা।
এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিভিল সার্জন ডা. তহিদুর রহমান বলেন, সদর হাসপাতালের প্রধান সমস্যা হলো জনবল সংকট। সদর হাসপাতাল ৫০ বেড থাকা অবস্থায় যে জনবল ছিলো সেই জনবল নিয়ে ১০০ বেডের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আবার সে তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। যেকারণে সকলরে সেবা দেওয়া অনেকটা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। হাসপাতালে দামি দামি মেশিন রয়েছে ঠিক। কিন্তু ওই মেশিন চালানোর জন্য দরকার ৪৪০ ভোল্টেজ। কিন্তু আমাদের রয়েছে ২২০ ভোল্টেজ। যে কারণে মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া পরীক্ষার করার জন্য বিভিন্ন ক্লিনিকের বিষয়ে তিনি বলেন এটি চিকিৎসরা কোনভাবেই করতে পারে না। এটি স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ। তারা সুবিধা পাওয়ার জন্য এটা করে থাকে। তিনি আরো বলেন, আমি নতুন এসেছি। যে কারণে সব বুঝে উঠতে পারিনি। তবে আশা করছি শীঘ্রই হাসপাতালের সকল অসঙ্গগতি গুলো বন্ধ করতে না পারলেও প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবো।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে সেবাগ্রহিতা ও অংশীজনের মুক্ত সংলাপ
পূর্ববর্তী পোস্ট