মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ডুব’ বড় পর্দায় আসবে ২৭ অক্টোবর। প্রয়াত নন্দিত কথাশিল্পী-নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের জীবনের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে তৈরি হওয়ার বিতর্ক জড়িয়ে থাকায় ছবিটি নিয়ে সরকারি দফতরে চিঠি চালাচালি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এবার জানা গেলো, ছবিটির পাঁচটি দৃশ্য ছেঁটে ফেলতে হয়েছে। এ সংক্রান্ত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের একটি নথি ফাঁস হয় বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর)। এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কে বা কারা ফাঁস করে দিয়েছে। এতে দেখা যায়, সাবেরী কর্তৃক নিতুর সঙ্গে জুতা পাল্টানোর দৃশ্য ও সংশ্লিষ্ট সংলাপ বাদ পড়েছে। দ্বিতীয় দৃশ্যের বিবরণে জাবেদ হাসানের সংলাপ, ‘এই গাড়ি, গাজীপুর চলো…’ বাদ দিতে হয়েছে।
কর্তন করা হয়েছে জাবেদ হাসানের মরদেহের পাশে নিতুর সঙ্গে তার শিশুসন্তানের দৃশ্যও। জাবেদ হাসানের কন্যা সাবেরীর সঙ্গে তার চাচার কথোপকথন অংশে ‘এখন নিতু তো বলছে নয়নতারায় কবর দিতে…’ শীর্ষক চাচার সংলাপসহ কবরের স্থান নির্ধারণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দৃশ্য ও সংলাপ কর্তন করা হয়েছে। একই সঙ্গে জাবেদ হাসানের মৃত্যুর পর অ্যাম্বুলেন্সে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়ার একটি দৃশ্যের পর অবশিষ্ট দৃশ্য ও সংলাপ কর্তন করা হয়েছে।
এসব দৃশ্য বাদ দেওয়ায় গত ৮ আগস্ট সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পায় ‘ডুব’। কয়েক মাস আগে হুমায়ূন পত্নী ও অভিনেত্রী-নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রিভিউ কমিটির অনাপত্তিপত্র স্থগিত হওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিল সরগরম।
বাংলাদেশে বলিউড অভিনেতা ইরফান খান অভিনীত প্রথম ছবি ‘ডুব’। এতে তার সঙ্গে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা, রোকেয়া প্রাচী ও কলকাতার পার্নো মিত্র।
চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সেন্সর বোর্ডে জমা পড়ে ‘ডুব’। কিন্তু এর মধ্যে দেশ-বিদেশের একাধিক গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়— কিংবদন্তি সাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের জীবন নিয়ে সাজানো হয়েছে ছবিটি। এক্ষেত্রে হুমায়ূনপত্নী মেহের আফরোজ শাওন কিংবা তার পরিবারের কোনও সদস্যের অনুমতি নেওয়া হয়নি। এমন অভিযোগ করে ১৩ ফেব্রুয়ারি সেন্সর বোর্ডে আপত্তিপত্র পাঠান শাওন। মূলত এ কারণে সেন্সর বোর্ডে জমা পড়ার অগেই আটকে যায় ‘ডুব’। ১৬ ফেব্রুয়ারি তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে প্রিভিউ কমিটির অনাপত্তিপত্র স্থগিত হয়। অবশেষে প্রায় ছয় মাস পর সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পায় ‘ডুব’।
অন্যদিকে ছবিটির গল্প যে হুমায়ূন আহমেদের জীবনের একাংশ থেকে নেওয়া তা বরাবরই অস্বীকার করেছেন ফারুকী। তার বক্তব্য ছিল এমন— ‘আমার সিনেমার সব চরিত্র কাল্পনিক। এটা বায়োপিক নহে।’
বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে ছবিটি প্রযোজনা করেছে ভারতের এসকে মুভিজ ও ইরফান খানের প্রতিষ্ঠান। এতে গান থাকছে কেবল একটি। ‘আহা জীবন’ শিরোনামের গানটি লিখেছেন ও গেয়েছেন চিরকুট ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য শারমীন সুলতানা সুমি।