ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে স্থাপন করা হলো যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি। গতকাল সোমবার নেগেভ মরুভূমির প্রাণকেন্দ্রে ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর স্কুল অব দ্য এয়ারাল ডিফেন্স ডিভিশনে এই ঘাঁটি স্থাপনের কাজ শেষ হয়। ঘাঁটিটিতে অল্প কিছু মার্কিন সেনাসদস্য কাজের পাশাপাশি বসবাস করবেন।
ইসরায়েল বিমানবাহিনীর মাশাবিম বিমানবাহিনীতে স্থাপিত এই ঘাঁটিতে এরই মধ্যে যোগ দিয়েছেন মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্যরা।
হারেটজ, টাইমস অব ইসরায়েলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই তথ্য জানিয়েছে।
ঘাঁটি উদ্বোধনের সময় ডিফেন্স ডিভিশনের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ভি হাইমোভিচ বলেন, এই ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সামরিক সহযোগিতার বিষয়টি প্রতিফলিত হলো। তিনি বলেন, ‘এই ঘাঁটিটি এখানে অবস্থানের জন্য স্থাপিত হয়েছে। ইসরায়েলে থাকা মার্কিন সম্পদ রক্ষা করতে এটিই যথাযথ পদক্ষেপ।’
নেগেভে ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্থাপিত এক্স ব্যান্ড রাডার সিস্টেমটি যে সেনারা পরিচালনা করেন, স্পষ্টতই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তার কথা উল্লেখ করেন। ভীষণ শক্তিশালী এই রাডার শত শত কিলোমিটার দূরে থাকা মিসাইলও শনাক্ত করতে পারে। ইসরায়েলের প্রতি ইরানের ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে দেশটির শক্তি বৃদ্ধি করতেই এই রাডারটি স্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপকে ঐতিহাসিক নয় বরং দুই দেশের বহু পুরোনো সম্পর্কের প্রতিফলন বলেও মনে করেন ইসরায়েলি এই কর্মকর্তা। উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ইসরায়েলের বাহিনী আরো উন্নয়নের সুযোগ পাবে।
আকাশে যুদ্ধের সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা ২০১৪ সালে গাজা যুদ্ধের সময়ই বোঝা গিয়েছিল বলে জানান হাইমোভিচ। সে সময় ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে হাজারো রকেট ছোড়া হয়। সেই সব অভিজ্ঞতা থেকেই সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইসরায়েলের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের ঘটনা এই অঞ্চলকে দুই দেশের বন্ধুত্বের শক্তির বিষয়ে বার্তা দেবে বলে মনে করেন দেশটির সেনা কর্মকর্তারা।
বিমানবাহিনীর ইসরায়েলের ঘাঁটির মধ্যে স্থাপিত এই মার্কিন বিমান ঘাঁটি পরিচালনা করবে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর ইউরোপিয়ান কমান্ড। এতে শক্তিশালী রাডার ছাড়াও রয়েছে সৈন্যদের থাকার জন্য ব্যারাক, অফিস এবং অন্যান্য সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা।