নিজস্ব প্রতিবেদক : সাতক্ষীরা পৌরসভার ৩য় তলার ছাদ ঢালাইয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তোয়াক্কা করা হচ্ছে না কোন প্রকার নিয়ম নীতির। টেন্ডার অনুযায়ী ছাদে ব্যবহারকৃত মালামাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার কথা থাকলেও সেটি না করে ছাদের ঢালাই সম্পন্ন করেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, একটি বিদেশি প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সাতক্ষীরা পৌরসভার একটি প্রশস্ত ভবন প্রয়োজন হয়। সে অনুযায়ী পৌরসভার উত্তর পাশের ছাদ ঢালাই করে সেখানে ভবন নির্মানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সাতক্ষীরা পৌরসভা। উক্ত ভবন নির্মানের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয় এবং গত ২১ জনু’১৭ তারিখে কাজটি করানোর জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ওই দিন অনেকে টেন্ডার জমা দেন। টেন্ডার জমাদানকারীদের মধ্যে লটারারী মাধ্যমে ১০৫ নং স্মারকে ৯ জুলাই’১৭ তারিখে ছাদের ওয়ার্ক অর্ডার পান শহরের কাছারী পাড়া এলাকার মাহিন এন্টারপ্রাইজ। যার মালিক মফজুলার হক সুমন। কাজটি ১৫ সেপ্টেম্বর’১৭ তারিখে ২ মাসের মধ্যে শেষ করার কথা উল্লেখ করা হয় উক্ত অর্ডারে।
এদিকে ছাদে ব্যবহৃত মালামাল পৌরসভার নিজস্ব প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) ও কুয়েট কর্তৃক পরিক্ষা করিয়ে ছাদে ব্যবহার করার কথা থাকলেও সেটি মানেনি ওই ঠিকাদার। উক্ত ঢালায়ের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে নিম্ন মানের খোয়া, ইট, বালি, সিমেন্ট ও রড। এছাড়া ছাদের ঢালাইয়ের উচ্চতা ৬ ইঞ্চি হওয়ার কথা থাকলেও ছাদের উচ্চতা করা হয়েছে ৪ ইঞ্চি। ছাদে ব্যবহৃত মালামাল পরিক্ষা না করিয়ে একদিকে সরকার হারিয়েছে প্রায় ১ লক্ষ টাকা রাজস্ব অন্যদিকে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের মালামাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পৌরকর্মকর্তা জানান, উক্ত কাজের ঠিকাদার যেভাবে কাজ করেছেন তাতে ৩০ লক্ষটাকাও খরচ করা হবে বলে মনে হচ্ছে না। অথচ উক্ত কাজের জন্য বরাদ্ধ করা হয়েছে ৫০ লক্ষ টাকা।
এদিকে উক্ত কাজটি ২ মাসের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও সে মেয়াদে কাজটি শেষ করেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। শুধুমাত্র ছাদ’র ঢালাই পর্যন্ত শেষ করে রাখা হয়েছে। অথচ ইতোমধ্যে ২ মাস ৫ দিন অতিবাহিত হয়েছে।
এবিষয়ে এল জি ই ডি’র ল্যাব টেকনেশিয়ান নূরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ তিনি বলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার নিজস্ব প্রকৌশলী রয়েছে। তারা সেটা ডিল করে আমাদের কাছে আসেন না।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল করিমের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, অফিসে টাইমে মেয়র মহোদয়ের অনুমতি ছাড়া আমি কোন তথ্য দিতে পারবো না। আপনি অফিস টাইমে পৌরসভায় এসে মেয়র সাহেবের সাথে কথা বলেন তিনি যে তথ্য দিতে বলবেন আমি দেবো।
এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে মেয়র সাহেবের সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ জানিয়ে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এদিকে এঘটনায় পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতীর ব্যবহৃত০১৭৬১ ৭০২৭৩২ নাম্বারে কয়েক ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করা যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে প্যানেল মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান বলেন, মালামাল পরীক্ষা করতেও তো সময়ের প্রয়োজন। আমরা মালামাল পরীক্ষা করার জন্য পাঠিয়েছি।
পূর্ববর্তী পোস্ট