শেখ তহিদুর ডাবলু : বহু জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ডিবি ইউনাইটেড হাইস্কুলের মাঠের কথিত আনন্দ মেলা ও লটারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বলে জানা গেছে। বিষয়টি ডেইলি সাতক্ষীরাকে নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দীন। ডেইলি সাতক্ষীরাকে তিনি জানিয়েছেন, “ওখানে কোন মেলার অনুমোদনই দেয়া হয়নি। ধরে নিন ওটা বন্ধ হয়ে গেছে।”
উল্লেখ্য, ডি বি ইউনাইটেড হাইস্কুলে মাঠে মাসব্যাপী আনন্দ মেলায় সার্কাস, যাত্রা ও দৈনিক র্যাফেল ড্রসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থার কথা সম্বলিত ব্যানারসহ একাধিক গেইট প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে এই মেলা ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর ২০১৭ পর্যন্ত চলবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন স্থানে একের পর মেলার আড়ালে জুয়া, অশ্লীল নৃত্য ও গরিবের রক্তচোষা র্যাফেল ড্র নামক লটারির কারণে জেলার সর্বসাধারণের মধ্যে ব্যাপক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতি, দেশের ৩২ জেলায় বন্যা, হাঙর অঞ্চলে ফসলহানি ও সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি মিলিয়ে জনজীবনে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় চাল কিনতে উপার্জন শেষ হওয়া দরিদ্র মানুষের সামান্য রোজগারের টাকাও চলে যেতে বসেছে এসব লটারি, জুয়া ও অশ্লীলতায়।
এদিকে, ডি বি হাইস্কুলের সভাপতি ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম এবং ডিবি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মুকুল সরকারি পরিপত্র লঙ্ঘন করে বিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম চলাকালীন এ ধরনের মেলার জন্য বিদ্যালয়ের মাঠ বরাদ্দ দেয়ায় ধুলিহর ও ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়নের ৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সভাপতিগণ সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক বরাবর শিক্ষার্থীদের একাডেমিক শিক্ষাবর্ষের শেষ মূহুর্তে তাদের লেখাপড়ার বিঘœ সৃষ্টি করতে পারে এমন কার্যক্রমের অনুমতি না দেয়ার আবেদন জানান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এ আবেদনের পক্ষে লিখিত সুপারিশ রয়েছে সাতক্ষীরা জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ নজরুল ইসলাম, সদর উপজেলা আ ’লীগ এর সভাপতি এস এম শওকত হোসেন, সদর উপজেলা আ ’লীগ এর সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজাহান আলী, সদর উপজেলা আ ’লীগ এর যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুর রশিদসহ বিভিন্ন ব্যক্তির।
পাঠকদের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর করা আবেদন পত্রটির ভাষ্য অক্ষুণœ রেখে নি¤েœ প্রকাশ করা হলো-
“আমরা নি¤œ স্বাক্ষরকারীগণ সাতক্ষীরা সদর ০৯ নং ব্রম্মরাজপুর ও ০৮ নং ধুলিহর ইউনিয়ন এ অবস্থিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়/ আলিয়া মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষক হইতেছি। উক্ত ২টি ইউনিনে ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৩টি আলিয়া মাদ্রাসা আছে। তাছাড়া অসংখ্য সরকারি প্রাধমিক বিদ্যালয় আছে। আগামী নভেম্বর মাসে এ সমস্ত স্কুল, মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রীদের জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া ১৮ সনের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের টেস্ট পরীক্ষা আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হবে এবং এবং প্রাধমিক বিদ্যালয় সমূহের সমাপনী পরীক্ষা আগামী ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। এ অবস্থায় ডি.বি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে সার্কাস অনুষ্ঠিত হলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র/ছাত্রীদের লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করানো কষ্টকর হয়ে যাবে এবং অধিকাংশ ছাত্র/ছাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উহাতে এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে আগামীতে অনুষ্ঠিত পাবলিক পরীক্ষায় পাশের হার কমে যাবে।
এমতাবস্তায়, সংশ্লিষ্ঠ এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষার মান সমুন্নত রাখতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলাধীন ০৯ নং ব্রম্মরাজপুর ইউনিয়নের ডি.বি মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে সার্কাস অনুষ্ঠানের অনুমতি না দিতে আপনার মর্জি হয়।”
পূর্ববর্তী পোস্ট