আসাদুজ্জামান : ‘সাতক্ষীরার আকর্ষণ, সড়ক পথে সুন্দরবন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা জেলাকে জেলা ব্রান্ডিংয়ে তুলে ধরা হবে। জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, উৎপাদন, শিল্প, সাহিত্য সব কিছুরই সম্মিলন ঘটবে এই স্লোগানে। এরই মধ্যে এ ব্যাপারে বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়েছে।
সোমবার সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো. মহিউদ্দিন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, সেই সাথে সাতক্ষীরারও অগ্রগতি হচ্ছে।
সুন্দরবন বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম একথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কেবলমাত্র সুন্দরবনই সাতক্ষীরাকে পরিচিত করেনি। এই জেলার আম, মাছ, প্রাণিসম্পদ, জেলার সন্দেশ, গো-দুগ্ধ, অধিক মাত্রায় খাদ্য শস্য বিশেষ করে ধান ও সবজি উৎপাদন এসব কিছুই এই জেলাকে সমৃদ্ধ করেছে। তিনি বলেন, জেলার শ্যামনগরে আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম পার্ক অনিন্দ্যসুন্দর সুন্দরবন দর্শনকে যেমন খুব কাছে এনে দিয়েছে তেমনি দেবহাটার দৃষ্টিনন্দন মিনি সুন্দরবন, সদর উপজেলার বাঁকালে মনোরম ইকোপার্ক, তালার পাটকেলঘাটায় কপোতাক্ষ তীরের নজরকাড়া নীলিমা পার্ক, আশাশুনির কেওড়া পার্ক, কালিগঞ্জের নদী তীরের ইকো পার্ক সাতক্ষীরাকে আরও পরিচিত করেছে। অচিরেই সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন মুন্সিগঞ্জে পর্যটন মোটেল গড়ে তোলা হবে বলেও জানান তিনি। জেলা প্রশাসক আরও বলেন সাতক্ষীরার মুস্তাফিজ ও সৌম্য সরকার বাংলাদেশকে বিশ্ব ক্রিকেটে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। এই ধারা অব্যাহত থাকলে সাতক্ষীরা আরও সমৃদ্ধি লাভ করবে বলে জানান তিনি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবদুল হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মূল বক্তব্য পড়ে শোনান জেলা তথ্য অফিসার মোজাম্মেল হক। এসময় জেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিসার অহিদুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো. মহিউদ্দিন আরও বলেন, জেলার আদিবাসী মুন্ডা, সুন্দরবনে জেলে বাওয়ালিদের জীবন জীবিকা, বন এলাকার বাঘ বিধবাদের জীবন নিয়ে প্রামান্য তথ্য তুলে ধরা হবে জানিয়ে তিনি বলেন এসব বিষয় দক্ষিনের সাতক্ষীরাকে শুধু দেশে নয় বহির্বিশ্বেও পরিচিত করেছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস। তিনি বলেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন এসব বিষয় নিয়ে জেলা ব্রান্ডিং বাস্তবায়ন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিশোর বাতায়নের মাধ্যমে শিশু কিশোরদের মেধার বিকাশ ও তাদেরকে সকল ক্ষেত্রে প্রতিযোগী করে তোলার কাজ চলছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে মহান মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেওয়ার পাশাপাশি তাদেরকে দেশ প্রেম ও দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ করা হবে। শিশু কিশোরদের সৃজনশীল করে তোলার জন্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। জেলার প্রাচীন ইতিহাস, কিংবদন্তী বরেণ্য ব্যক্তি, সংস্কৃতি সবই তুলে ধরার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
পূর্ববর্তী পোস্ট