নিজস্ব প্রতিবেদক : দশ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণের অভিযোগে দু’দকের দায়েরকৃত মামলায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যান ও সাতজন ইউপি সদস্যের জামিন বাতিল না’ মঞ্জুর করেছেন জেলা ও দায়রা জজ জোয়ার্দ্দার আমিরুল ইসলাম। নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে বৃহষ্পতিবার দুপুরে আসামীপক্ষের জামিন আবেদন শুনানী শেষে তিনি এ আদেশ দেন। জামিন না’মঞ্জুর হওয়া আসামীরা হলেন, কালিগঞ্জ উপজেলার চম্পাফুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক গাইন, ইউপি সদস্য গোলাম কাইয়ুম, আব্দুর রশিদ গাইন, মোঃ আব্দুস সাত্তার খান, ঠাকুর দাস সরকার, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রাধা রানী অধিকারী, রাফেজা খাতুন ও শ্যামলী রানী সরকার। ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলাধীন ৩নং চম্পাফুল ইউনিয়নে হত দরিদ্রদের জন্য সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ১০ টাকা কেজি দরে মাসিক ৩০ কেজি হারে (পরিবার প্রতি) চাল বিতরণ নীতিমালার আওতায় ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, ছয়জন ইউপি সদস্য ও তিনজন সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পরষ্পর যোগসাজসে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ নভেম্বরের মধ্যে নিয়মবহির্ভুতভাবে ব্যবসায়ি, চাকুরিজীবী, ধনী এমন ৪৬জন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল ব্যক্তিকে তালিকাভুক্ত করে ৪১ হাজার ৪০০ টাকা মূল্যের চার হাজার ১৪০ কেজি চাল আত্মসাৎ করেন বলে গত ২৩ অক্টোবর ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদের অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক তদন্ত করে সত্যতা পায়। এ ঘটনায় দূর্ণীতি দমন কমিশন খুলনার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারি পরিচালক রাজ কুমার সাহা বাদি হয়ে গত ১৪ জুন কালিগঞ্জ থানায় এক মামলা(১৯নং) দায়ের করেন। এদিকে গত ১০ জুলাই মামলার ১০ জন আসামি মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ৮সপ্তাহের অন্তবর্তীকালিন জামিন নিলেও ইউপি সদস্য আবুল কালামের পক্ষে আইনজীবী এড. সত্যরঞ্জন মন্ডলের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৪ আগষ্ট সুপ্রিম কোর্টের এপিলেড ডিভিশনে জামিন আদেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে মামলা নিষ্পত্তি করা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে আসামিরা নিম্ন আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ৩ অক্টোবর সাতক্ষীরার আমলী আদালত-২ এর বিচারক রাজীব রায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ি গ্রেফতারি পরোয়ানার আসামি ইউপি সদস্য আবু বক্কর গাইন ও আবু বক্কর গাজী ব্যতীত ইউপি চেয়ারম্যান ও সাত ইউপি সদস্য গত ২৬ অক্টোবর আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে শুনানী শেষে বিচারক রাজীব রায় তা না’মঞ্জুর করেন। এদিকে নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আসামীপক্ষ গত ৩০ অক্টোবর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ১৩২৯/১৭ নং মিস কেস দাখিল করেন। বৃহষ্পতিবার ওই মামলার শুনানী শেষে বিচারক আসামীদের জামিন আবেদন না’মঞ্জুর করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন, জজ কোর্টের পিপি এড. ওসমান গণি, দু’দকের আইনজীবী এড. আসাদুজ্জামান দিলু, অতিরিক্ত পিপি এড. ফাহিমুল হক কিসলু, এড. বিকেকানন্দ রায় প্রমুখ। আসামীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. শাহ আলম, অ্যাড. মিজানুর রহমান পিণ্টু, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন,অতিরিক্ত পিপি অ্যাড আজাহারুল ইসলাম প্রমুখ।
পূর্ববর্তী পোস্ট