তালা প্রতিনিধি: শালিখা মোড় হয়ে তালা-কাটিপাড়া সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। যানবাহন সহ পথচারীদের যাতায়াতের সবচেয়ে সহজ এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হচ্ছে- তালা-শালিখা সড়কের শালিখা মোড় হয়ে শালিখা নদী পার হয়ে কাটিপাড়া বাজার সড়ক। শালিখা নদীর দু’পারেই গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঐতিহাসিক স্থান, অসংখ্য গ্রাম এবং দুটি জেলার একাধিক উপজেলা অবস্থিত। যে কারনে বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন শালিখা নদী পার হয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু শালিখা মোড় সংলগ্নে অধিক জনগুরুত্বপূর্র্ণ শালিখা নদীর উপর অদ্যবদী কোনও ব্রীজ বা সেতু নির্মিত হয়নি। যদিও যাতায়াতের জন্য ইতোপূর্বে একটি সাঁকো নির্মিত হলেও সময়ের ব্যবধানে তা ভেঙ্গে নদীতে বিলিন হয়েছিল কয়েক বছর আগে। সেই থেকে অদ্যবদী সরকারি ভাবে সাঁকোটি সংস্কার বা ব্রীজ নির্মানে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। যেকারনে স্থানীয় গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি নদীর উপর বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে ব্যবসা শুরু করায় বর্তমানে তার উপর দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে মানুষ ও যানবাহন। প্রতিনিয়ত হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু ও পশু সহ ভারি যানবাহন চলাচল করলেও বাঁশের সাঁকোর স্থলে ব্রীজ নির্মান করার উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। এতে করে যে কোনও সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। এবিষয়ে তালা ও পাইকগাছা উপজেলার মানুষ বিভিন্ন সময় সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন দপ্তরে আবেদন করলেও তাতে টনক নড়েনি সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের। তবে, সাঁকোটি সংস্কারের জন্য তালা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ২বার এবং পাইকগাছা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে ১বার এডিপির বরাদ্দ দেয়া হয়। অথচ সাঁকো সংস্কারের জন্য ১টাকারও কাজ না করে দুই উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে যোগসাজসে সমূদয় টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও টেন্ডারের বিষয় এবং টাকা আত্মসাতের বিষয় “জানা নেই” বলে দাবী করেছেন তালা উপজেলা প্রকৌশলী কাজী আবু সাঈদ মো. জসীম। পাইকগাছা উপজেলার কাটিপাড়া গ্রামের মো. আবুল হোসাইন খান জানান, তালা উপজেলা সহ পাইকগাছার ঐতিহ্যবাহী বাঁকা ও কাটিপাড়া বাজার, জগৎখ্যাত বিজ্ঞানী আশ্চর্য্য প্রফুল্য চন্দ্র রায়’র রাড়–লী গ্রাম ও তাঁর বাড়ি, আশাশুনি সদর, কয়রা উপজেলা ও সুন্দরবন সহ তৎসংলগ্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন শালিখা নদীর উপর দিয়ে যাতায়াত করে। কিন্তু নদীর উপর আজ পর্যন্ত কোনও সেতু বা ব্রীজ নির্মিত হয়নি। যদিও নদীর উপর একটি সাঁকো তৈরি করা হলেও পানির স্রোতে তা ভেঙ্গে ভেঁসে যায়। তিনি বলেন, ভেঁসে যাওয়া সাঁকোটি সংস্কার বা পুন:নির্মান করার জন্য কর্তৃপক্ষ কোনও উদ্যোগ অদ্যবদী গ্রহন করেনি। যেকারনে যোগাযোগ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার জন্য কাটিপাড়া, শালিখা, বালিয়া ও মুড়াগাছা গ্রামের ৩০জন ব্যক্তি নদীর উপর বাঁশ ও কাঠ দিয়ে যেনতেন করে একটি সাঁকো তৈরি করেছে। যার উপর দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে মানুষজন সহ মটরসাইকেল, ভ্যান, সাইকেল, নসিমন, করিমন এবং অন্যান্য যানবাহন চলাচল করলেও জোয়ারের সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। কাঠ-বাঁশের তৈরি সাঁকোটি যেনতেন হওয়ায় যেকোনও সময় এখানে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মো. আবুল হোসাইন খান আশংকা ব্যক্ত করেছেন। এজন্য তিনি সহ শালিখা নদী সংলগ্ন এলাকার শতাধিক ব্যক্তি অবিলম্বে একটি ব্রীজ নির্মান করার দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট