গত এক বছরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান ও মামলার সংখ্যা কমেছে। তবে শাস্তির হার বেড়েছে। এই সময়ের মধ্যে প্রতিরোধ কর্মসূচির ওপর বেশি জোর দিয়েছে সংস্থাটি। দুদকের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদন তুলে দেন চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
ওই প্রতিবেদনে ২০১৭ সালে দুদকের কার্যক্রমের সার্বিক চিত্রের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, আয়কর বিভাগ, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগসহ মোট নয়টি খাতে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি প্রতিরোধে সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগের বছরের তুলনায় দুদকে ৩৮ শতাংশ অভিযোগ বেশি এসেছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর ৮ হাজার অভিযোগের মধ্য থেকে ৯৩৭টি অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। আগের বছরের ৩৫৯টি মামলার বিপরীতে ২০১৭ সালে দুদক মামলা করেছে ২৭৩টি। তবে দুদকের মামলায় সাজার হার হয়েছে ৬৮ শতাংশ, যা আগের বছর ছিল ৫৪ শতাংশ।
২০১৭ সালে সর্বোচ্চসংখ্যক ২৪টি ফাঁদ মামলা পরিচালনা করেছে সংস্থাটি। ২০১৬ সালে গ্রেপ্তার ৩৮৮ জনের বিপরীতে ২০১৭ সালে দুদক গ্রেপ্তার করেছে ১৮২ জনকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাঁদের সংখ্যা ৮৪ জন। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের ২৫ জন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী, জনপ্রতিনিধি ১৩ জন, অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ১০ জন এবং ব্যবসায়ী ও অন্যান্য পেশার ৫০ জন।
বার্ষিক প্রতিবেদন প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, গত বছর কমিশন অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ করে। তাই অনেক অভিযোগ এলেও অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয়েছে কম। মামলা ও অভিযোগপত্র কমে যাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের সংশোধনী এবং মামলা বা অভিযোগপত্রের গুণগত মান নিশ্চিত করার কারণে এ সংখ্যা কিছুটা কমেছে। যেনতেনভাবে একটি মামলা করে মানুষকে হয়রানির পথ বন্ধ করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।