কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে সরকার। আজ সোমবার (৯ এপ্রিল) সকাল ১১টায় আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের এই প্রস্তাব দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহঙ্গীর কবির নানক।
রবিবার (৮ এপ্রিল) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে তিনি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে এ প্রস্তাব দেন।
নানক বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা কোটা ব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমরা সরকারের পক্ষ থেকে বলতে চাই, এই পরিস্থিতি আমাদের কাম্য নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিষয়টি অবগত রয়েছেন। তিনি শিক্ষার্থী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার সকাল ১১টায় সরকারের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠকের প্রস্তাব জানিয়ে নানক বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী মন্ত্রী ওবয়াদুল কাদেরকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যারা এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের আগামীকাল সকাল ১১টায় সরকারের সঙ্গে বৈঠকে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
সরকারের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনা কোথায় হবে, জানতে চাইলে সরকারের এই প্রতিনিধি বলেন, আলোচনা কোথায় হবে, তা পরে ঠিক করা হবে। এ সময় তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাঙ্গনে ও ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা তাদের ছাত্রাবাসে চলে যাবেন।
উল্লেখ্য, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, রবিবার দুপুর ২টায় ঢাবি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীদের পদযাত্রা শুরু হয়। পরে রাজু ভাস্কর্য হয়ে নীলক্ষেত ও কাঁটাবন ঘুরে পদযাত্রাটি শাহবাগ মোড়ে আসে। বিকাল ৩টা থেকে সেখানেই অবস্থান নেন। এ সময় শাহবাগের আশপাশের সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবস্থান ধরে রাখলে রাত পৌনে ৮টার দিকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। এ সময় কয়েকজনকে আটকও করে পুলিশ। এরপরই পুলিশ আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
পুলিশের অ্যাকশনের পর শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও টিএসসি এলাকায়। সবশেষে তারা ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামানের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তারা উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন এবং বাসভবনে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকেন।