ভিন্ন স্বাদের খবর: এ নশ্বর পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত ঘটে যাচ্ছে আজিব ঘটনা। ঘটে যাওয়া বিচিত্র ঘটনা সবগুলোই আবার মানুষের আয়ত্বে আসে না। বিস্ময় কর এমনই এক ঘটনার জন্ম পশ্চিম আফ্রিকার বুরকিনা ফাসোয়। রাজধানী শহর ওইগাডোগো থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে বাজুলা নামে একটি ছোট্ট গ্রাম। এ গ্রামে রয়েছে একটি হ্রদ, যেখানে বাস করে ১০০রও বেশি কুমির।
ছোট বেলায় শিশুদের ভয় দেখানো হয় কুমির ভয়ঙ্কর জলজ প্রাণি। সামনে পেলে আর রক্ষা নেই। তবে এসব ভয়কে দূরে সরিয়ে এক নজির সৃষ্টি করেছে ছোট্র হ্রদের শত কুমির আর সেখানে বসবাসরত মানুষজন। ছোট্র গ্রামটির সকল শ্রেণি মানুষদের সঙ্গে অবিশ্বাস্য এক গল্প রয়েছে এসব কুমিরের। ওই গ্রামের শিশুরা নাকি কুমিরের পিঠে চড়ে খেলা করে, ঘুরে বেড়ায়। তাদের পাশে পাশেই সাঁতার কাটে গ্রামের বড়রা। কুমিরের সঙ্গে চরম বন্ধুত্ব! এযেন চরম শত্রুর সঙ্গে বসবাস। গ্রামবাসীদের মতে, এই বন্ধুত্ব চলে আসছে ১৫ শতক থেকে।
জানা যায়, কোনও এক সময়ে নাকি বাজুলায় প্রবল খরা দেখা দেয়। মানুষ যখন পানির কষ্টে ভুগছিলেন, তখন গ্রামের মহিলাদের একটি গুপ্ত জলাশয়ের কাছে নিয়ে যায় এইসব কুমির। তার পর থেকে কুমিরের প্রতি ওই গ্রামের মানুষদের ভালবাসার প্রতিদান দিতে শুরু করে। প্রতি বছর স্থানীয় বিনোদন অনুষ্ঠান ‘কুম লাকরে’ নামে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গ্রামবাসীরা। হ্রদের কুমিরদের খাওয়ানো হয় অনেক কিছু, যাতে তারা গ্রামবাসীকে আশীর্বাদ করে সুখ-সমৃদ্ধির জন্য।
বাজুলা গ্রামের মানুষজন মনে করেন, এই কুমিরের মধ্যেই রয়েছে তাঁদের পূর্বপুরুষের আত্মা। যে কারণে, কোনও কুমিরের মৃত্যু হলে, মানুষের মতোই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করে গ্রামবাসীরা।
বুরকিনা ফাসোর কুমির-মানুষের এই অসম বন্ধুত্ব দেখতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা। বছরে প্রায় পাঁচ হাজার পর্যটক যান পশ্চিম আফ্রিকার এই গ্রামে। প্রকৃত পক্ষে সংখ্যাটা আরো বেশি।