দেশের খবর: যদি প্রশ্ন করা হয়, ‘গত পাঁচদিনে ঢাকা শহরে আপনি কী দৃশ্য দেখেছেন?’ শতভাগ মানুষ বলবেন, শিক্ষার্থীদের অনন্য সাধারণ সব উদ্যোগের কথা। তারা সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সরকার এবং প্রশাসনের উপর মহল পর্যন্ত সকলের গাড়ির লাইসেন্স এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করছে। তারা সড়ক পরিস্কার করছে। সড়কে সারি বেঁধে সুশৃঙ্খলভাবে গাড়ি চালাতে বাধ্য করছে। প্রচণ্ড ক্ষোভে গাড়ি ভাঙচুর করে সেই ভাঙা কাঁচের টুকরা রাস্তা থেকে নিজেরাই পরিস্কার করছে।
এই ছেলেরা আবার গুরুতর অসুস্থ রোগিকে পৌঁছে দিচ্ছে হাসপাতালে। রাস্তার মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়া রিকশাচালককে নিজেরাই রিকশা চালিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে হাসপাতালে।
‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনে রাস্তার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও সোচ্চার শিক্ষার্থীরা। একদিকে ‘মামা, লাইসেন্স আছে?’ ভিডিও যেমন ভাইরাল হচ্ছে, অন্যদিকে ‘ইমার্জেন্সি লেন’ তৈরির দৃশ্যও ভাইরাল হচ্ছে।
শুধু ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ প্লাকার্ড ধরে রাস্তায় বসে থাকা নয়; শিক্ষার্থীরা ‘যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবেই তুমি বাংলাদেশ’ প্লাকার্ড নিয়েও রাস্তায় দাঁড়াচ্ছে।
আবার অনেকের হাতে কিছু অশ্লীল ভাষা সম্বলিত প্লাকার্ড এবং সরকারবিরোধী স্লোগানও দিতে দেখা গেছে যেটা শোভনীয় নয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (৩ আগস্ট) আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে এক যৌথসভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা অশ্লীল ভাষায় যেভাবে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়, তা শোভনীয় নয়। কোনো অশুভ মহল হয়তো তাদের ওপর ভর করছে। কোথা থেকে খাবার এসেছে, কারা খাবার সরবরাহ করছে, তা আমাদের জানা আছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে বিএনপি ও সাম্প্রদায়িক শক্তি ব্যর্থ হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ভর করে আন্দোলনকে উস্কে দিতে চায়।’
‘রাস্তায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় জনগণের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। আশা করি শিগগিরই এই দুর্ভোগের অবসান হবে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। সড়কের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সদস্য ও অভিভাবকদের সহযোগিতা কামনা করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর বিষয়ে মনিটরিং করছেন এবং আগামী সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনতে নতুন আইনের খসড়া চূড়ান্ত করে আগামী সংসদ অধিবেশনে তা পাস করার জন্য উত্থাপন করা হবে।’
রাজনীতিক অশুভ তৎপরতার মাধ্যমে যাতে কেউ অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান সড়ক পরিবহনমন্ত্রী।