দেশের খবর: বিসিএস, ব্যাংকসহ বিভিন্ন ধরনের সরকারি চাকরির নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানানো হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হচ্ছেন, গোপালগঞ্জের মো. ইব্রাহিম ও মো. হাসমত আলী সিকদার, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের মো. আইয়ুব আলী বাধন, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার মো. মোস্তফা কামাল, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মো. মনোয়ার হোসেন, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের মো. নুরুল ইসলাম, ধানমণ্ডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হোসনে আরা বেগম এবং অগ্রণী স্কুল ও কলেজ সহকারী শিক্ষক গোলাম মোহাম্মদ বাবুল।
সিআইডির ‘অর্গানাইজড ক্রাইমে’র বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একজনকে গ্রেপ্তার করেছি গত শুক্রবার। তাঁকে আমরা চার দিনের রিমান্ডে এনেছি। এই চক্রের নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছি। বাকি আটজনকে গতকাল গ্রেপ্তার করেছি বিভিন্ন সময়। আমরা জিজ্ঞাসাবাদে যেটা জানতে পেরেছি; বিসিএস কর্মকর্তা কয়েকজন পেয়েছি। আমরা ব্যাংক কর্মকর্তা কয়েকজন পেয়েছি। আমরা অন্যান্য সরকারি অফিসেও চাকরি করছেন এমন কয়েকজনকে পেয়েছি। আমরা গতকাল থেকে এ পর্যন্ত অনেক তথ্য জোগাড় করেছি। আমরা হয়তো আগামীতে তাঁদের রিমান্ডে এনে সুনির্দিষ্ট তথ্য আপনাদের দিতে পারব।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভর্তি কিংবা নিয়োগ পরীক্ষায় মূলত দুভাবে জালিয়াতি হয়। একটি চক্র আগের রাতে প্রেস থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁস করত। আরেকটি চক্র পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্র নিয়ে দ্রুত তা সমাধান করে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীকে সরবরাহ করত। আগের রাতে প্রেস থেকে প্রশ্নফাঁস চক্রের পুরো চক্র চিহ্নিত করা গেলেও ‘ডিভাইস চক্র’টি বাকি ছিল। এরপর ‘ডিভাইস চক্রে’র প্রধান বিকেএসপির সহকারী পরিচালক অলিপ কুমার বিশ্বাস গণমাধ্যমে নাম প্রকাশের পর গা ঢাকা দেয়।
প্রেস বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান যারা এনালগ পদ্ধতিতে প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস করে থাকে তাদের আইনের আওতায় আনা যতটা সহজ ডিজিটাল পদ্ধতি অবলম্বনকারীদের আইনের আওতায় আনা ততটাই জটিল। এই চক্রটি গত কয়েক বছর ধরে লাখো তরুণের স্বপ্নের চাকরি বিসিএস পরীক্ষাতেও জালিয়াতি করে আসছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, পাঁচদিনের এক সাঁড়াশি অভিযানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ডিজিটাল ডিভাইস চক্রের ‘মাস্টার মাইন্ড’ বিকেএসপির সহকারী পরিচালক অলিপ কুমার বিশ্বাস, বিএডিসির সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, ৩৬তম বিসিএসে নন ক্যাডার পদে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক হিসেবে সুপারিশ প্রাপ্ত ইব্রাহিম এবং ৩৮তম বিসিএসের প্রিলিতে উত্তীর্ণ আয়ুব আলী বাঁধনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
এ ছাড়া পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে প্রশ্নপত্র সরবরাহের অভিযোগে রাজধানীর অগ্রণী স্কুলের ইংরেজির শিক্ষক গোলাম মোহম্মদ বাবুল, অফিস সহায়ক (পিওন) আনোয়ার হোসেন মজুমদার এবং মো. নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ছাড়া একই অভিযোগে ধানমণ্ডি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের শিক্ষক হোসনে আরা বেগম এবং পিওন হাসমত আলী শিকদারকে আটক করা হয়েছে। আটকের সময় হাসমতের কাছে ওই দিনের বিসিএস লিখিত পরীক্ষার কয়েক কপি প্রশ্নপত্র এবং ৬০ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।
বিসিএসসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, গ্রেপ্তার ৮
পূর্ববর্তী পোস্ট