অনলাইন ডেস্ক: আগামী মাসে শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে ভর্তিযুদ্ধ। ওই ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে শিক্ষার্থীদের উস্কে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। এরই মধ্যে একটি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে বলেছে- প্রশ্ন ফাঁসের কথা বলে শিক্ষার্থীদের খেপিয়ে তুলে রাজপথে ২০ লাখ ছাত্রছাত্রী জড়ো করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে করে ফায়দা নেওয়ার আয়োজন চলছে।
গতকাল রোববার (১২ আগস্ট) ঢাকা মহানগর পুলিশের সব বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা ও ৫০ থানার ওসিদের নিয়ে অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। বৈঠকে আগামী মাসে ছাত্রদের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে সহিংস আন্দোলনের ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ের সব পুলিশ সদস্যকে সতর্ক করা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে আসে, ঢাকার অধিকাংশ কোচিং সেন্টার শিবির নেতাদের মাধ্যমে পরিচালিত। এসব কোচিং সেন্টার থেকে এখন থেকেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে সতর্কতা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকটি কোচিং সেন্টার থেকে এমন বার্তাও দেওয়া হচ্ছে- এই সরকারের আমলে এটাই শেষ ভর্তি পরীক্ষা। তাই ব্যাপকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার প্রক্রিয়া করতে হবে। একাধিক কোচিং সেন্টারে ভর্তিচ্ছুদের নিয়ে ফেসবুকে গ্রুপ করা হচ্ছে। সেখানে বলা হচ্ছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার গুজব ছড়িয়ে তা গ্রুপে জানানো হবে। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা বর্জন করে রাজপথ অবরোধ করার কথাও বলা হয়েছে। ষড়যন্ত্রকারী সাইবার ফোর্সের সদস্যরা ভুয়া প্রশ্নপত্র ফেসবুকে ছড়িয়ে দেবে। পরে ক্ষুব্ধ ছাত্ররা রাস্তায় নামবে। এর সঙ্গে যুক্ত হবে বিএনপি ও শিবিরের কর্মীরা। তারা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে ভাংচুর ও জ্বালাও-পোড়াও শুরু করবে। এতে সরকারের শেষ সময়ে বেকায়দায় ফেলার ছক কষা হচ্ছে।
দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আগামী ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস ও ঈদ ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তার বিষয় গতকালের বৈঠকে উঠে আসে। সেখানে বলা হয়, ১৫ আগস্ট ঘিরেও গুজব ছড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ডিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তারা সাইবার জগতে যে কোনো ধরনের গুজবের ব্যাপারে সবাইকে আরও সতর্ক থাকতে বলেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় মৃত্যু ও ধর্ষণের গুজব ছড়িয়ে যারা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করেছিল, আগামীতে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়। এমনকি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে যে কোনো উস্কানিতে পা না দিয়ে শান্তভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান ডিএমপি কমিশনার।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায়, কোরবানির হাটের নিরাপত্তা ও যে কোনো চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি ও জাল টাকা তৈরি চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হবে। উগ্রপন্থিরা যাতে কোনো ধরনের সুযোগ নিতে না পারে সে ব্যাপারেও সবাইকে সতর্ক করা হয়।