দেশের খবর: আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগারগাঁওয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়াও বিদেশিদের আগমন বারবে। এ কারণে ইসি সচিবালয়ের সামনের বস্তি ও অবৈধ দোকান পাট উচ্ছেদ করে নিরাপত্তা বাড়নো হচ্ছে। এছাড়া ফেম্বোসা সম্মেলন ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে। সে ক্ষেত্রে অনেক বিদেশি অতিথিও সচিবালয়ে আসতে পারেন।
সূত্র জানায়, সার্কভুক্ত আটটি দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনারদের সংগঠন দ্য ফোরাম ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বডিজ অব সাউথ এশিয়া (ফেম্বোসা)। প্রতিবছর অনুষ্ঠেয় ফেম্বোসা সম্মেলন এবার বাংলাদেশে ৫ ও ৬ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশে সার্কভুক্ত অন্য সাতটি দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অথবা তাদের দূতরা যোগ দেবেন সম্মেলনে। রাষ্ট্রীয় অতিথিদের আতিথেয়তায় যাতে কোনো কমতি না থাকে সেজন্য নির্বাচন কমিশনও (ইসি) বেশ সজাগ।
কমিশনের ৩৫তম সভার আলোচ্যসূচিও ছিল ফেম্বোসা সম্মেলন আয়োজনের অগ্রগতি অবহিত করা বিষয়ে। কেবল ভেতরে নয়, কমিশনের বাইরেও চলছে ‘দৃষ্টি কটু’ সবকিছু দূর করার কাজ। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের মোড়ে অবস্থিত আডিবি ভবনের পাশে বেগম রোকেয়া সরণী থেকে সোজা একটি রাস্তা নির্বাচন কমিশন ভবনের দিকে চলে এসেছে। রাস্তাটি প্রবীণ হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেকটস বাংলাদেশ ভবনের কাছে আসলে, প্রতিষ্ঠান দুটোর সামনের ফুটপাত পরিষ্কার করা হচ্ছে। অন্য সময় উদ্যোগ না থাকলেও ফেম্বোসা সম্মেলন ও সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ফুটপাত পরিষ্কার ও রঙ করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
শুধু ফুটপাত পরিষ্কার নয়, ফেম্বোসা সম্মেলন ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সামনের রাস্তার পাশে থাকা বস্তি, দোকানপাট, নার্সারি সব উচ্ছেদ করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। গত ৩০ আগস্ট, বৃহস্পতিবার পরিসংখ্যান সড়ক থেকে সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ রোড পর্যন্ত শতাধিক ঘর উচ্ছেদ করে সিটি করপোরেশন। সামনে আরো অভিযানের পরিকল্পনাও রয়েছে ইসির।
এদিকে বস্তিবাসীদের অভিযোগ, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ঈদের আগে বস্তি ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু বস্তিবাসীদের ঈদের পর বস্তি ছাড়ার জন্য আর কোনো নির্দেশনা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। নোটিশ ছাড়াই গত ৩০ আগস্ট আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জাম এনে বস্তি, নার্সারি উচ্ছেদ করে সিটি করপোরেশন। এখনও কিছু ভাঙা ঘর রয়ে গেছে। তাদের আশঙ্কা, সেগুলো পরিষ্কার করতে আগামী রবিবারও আবার উচ্ছেদ অভিযান চলবে। বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করা হলেও তাদের পুনর্বাসনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি উত্তর সিটি করপোরেশন।
সিটি করপোরেশন বলছে, ফেম্বোসা সম্মেলনকে সামনে রেখে তারা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে। সম্মেলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে। উচ্ছেদ হয়ে গেলে সেখানে রাস্তা প্রশস্ত ও উন্নয়ন কাজ চলবে।
ইসি সূত্রে জানা যায়, ফেম্বোসা সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে অতিথিরা আসতে শুরু করবেন। অতিথিরা অবস্থান করবেন রাজধানীর হোটেল রেডিসনে। সেখানে ফেম্বোসা সম্মেলন হবে। সম্মেলন শেষে অতিথিরা ৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার ভ্রমণে যাবেন, ওই দিনই ঢাকায় ফিরবেন তারা। ৫ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের প্রথম দিন রাজধানীর হোটেল রেডিসনে উদ্বোধনসহ সারা দিন বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন আফগানিস্তান, ভূটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনাররা।
সারাদিনের সম্মেলন শেষে সন্ধ্যা ৬টা ২ থেকে ৭টা ২০ মিনিট পর্যন্ত জাতীয় সংসদ পরিদর্শন করবেন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনসহ অতিথিরা।
এরপর সাড়ে ৭টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনের উদ্দেশে জাতীয় সংসদ ত্যাগ করবেন তারা। ৭টা ৪৫ মিনিটে অতিথিরা নির্বাচন ভবনে পৌঁছবেন। এরপর ৭টা ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা নির্বাচন ভবনে অবস্থান করবেন অতিথিরা। ৮টা ৪৫ মিনিটে হোটেল রেডিসনের উদ্দেশে নির্বাচন ভবন ত্যাগ করবেন অতিথিরা।
ইসিতে আসছে বিদেশি অতিথি, উচ্ছেদ করা হচ্ছে বস্তি
পূর্ববর্তী পোস্ট