ন্যাশনাল ডেস্ক: আজ মহান বিজয় দিবস। এ দিনটি হচ্ছে বাঙালি জাতির হাজার বছরের শৌর্যবীর্য এবং বীরত্বের এক অবিস্মরণীয় দিবস। বীরের জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার দিন। পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন দেশের অভ্যূদয়ের দিন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃতে নয়মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের এই দিনে বিকেলে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।
যে অস্ত্র দিয়ে বর্বর পাকবাহিনী দীর্ঘ নয় মাস ত্রিশ লাখ বাঙালিকে হত্যা করেছে, দু’লাখ মা-বোনের সমভ্রম কেড়ে নিয়েছে সেই অস্ত্র পায়ের কাছে নামিয়ে রেখে একরাশ হতাশা এবং অপমানের গ্লানি নিয়ে লড়াকু বাঙালির কাছে পরাজয় মেনে নেয় তারা। সেই থেকে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পালিত হয়ে আসছে। এবার জাতি ৪৫তম বিজয় দিবস উদযাপন করবে।
দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবী এবং একাত্তরের মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর হচ্ছে এই স্বস্তি নিয়ে আজ কৃতজ্ঞ জাতি সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করবে দেশের পরাধীনতার গ্লানি মোচনে প্রাণ উৎসর্গ করা বীর সন্তানদের। দিবসটি পালন শুরু হবে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে। মহান বিজয় দিবসে ঊপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পার্ঘ অর্পণ করে সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে জনতার ঢল নামবে। শ্রদ্ধার সাথে তারা শহীদদের উদ্দেশে নিবেদন করবেন পুষ্পাঞ্জলি। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের সব প্রান্তের মানুষ অংশ নেবে বিজয় দিবসে। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠ ভাষণ আর মুক্তিযুদ্ধের সময়ের জাগরণী গানে আকাশ-বাতাস হবে মুখরিত।
এবারের বিজয় দিবস পালিত হবে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। শোক আর রক্তের ঋণ শোধ করার গর্ব নিয়ে উজ্জবিত জাতি দিবসটি পালন করবে অন্যরকম অনুভূতি নিয়ে। অফুরন্ত আত্মত্যাগ এবং রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই মহান বিজয়ের ৪৫ বছর পূর্ণ হবে আজ।
বিজয় দিবস সরকারি ছুটির দিন। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। রাজধানীসহ দেশের বড় বড় শহরগুলোর প্রধান সড়ক ও সড়ক দ্বীপ জাতীয় পতাকায় সজ্জিত করা হবে। রাতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় করা হবে আলোকসজ্জা। হাসপাতাল, কারাগার ও এতিমখানাগুলোতে উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হবে। সংবাদপত্র বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করবে, বেতার ও টিভি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘যার যা কিছু আছে’ তা নিয়েই স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন ‘ এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। পরে ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে বাঙালিরা অস্ত্র হাতে পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই মুক্তিযুদ্ধে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, ভুটান, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সাহায্য-সহযোগিতা করে। অবশেষে বাঙালি দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে বুকের উষ্ণ রক্তে রাঙিয়ে রাত্রীর বৃন্ত থেকে ছিনিয়ে আনে ফুটন্ত সকাল।
বিজয়ের এই ৪৫ বছর অনেক চরাই-উতরাই পেরিয়েছে জাতি। কখনো সামনে এগিয়েছে, আবার পিছিয়ে গেছে নানা রাজনৈতিক টানাপোড়নে। তবুও হতোদ্যম হয়নি। বিলম্বে হলেও শুরু হয়েছে ইতিহাসের দায়-মোচনের প্রচেষ্টা। বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বিচার সম্পন্ন হয়েছে। চলছে একাত্তরের মানবতা বিরোধী-যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। এ ছাড়াও হার না মানা বাঙালি অর্থনৈতিক-সামাজিক এবং ক্রীড়াতেও উড়াচ্ছে বিজয় নিশান।
শিক্ষকরাই হবেন শিক্ষা কর্মকর্তা
ন্যাশনাল ডেস্ক: সরকারি হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দিয়ে উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদায়ন করা হবে। পর্যায়ক্রমে তারা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে পদোন্নতি পাবেন। নতুন করে সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে আর নিয়োগ দেওয়া হবে না। তবে বর্তমানে যারা কর্মরত আছেন তারা পদোন্নতিসহ সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা পাবেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এ লক্ষ্যে একটি নীতিমালা চূড়ান্ত হয়েছে। বর্তমানে তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব চৌধুরী মুফাদ আহমদ যুগান্তরকে বলেন, শিক্ষা প্রশাসনে শিক্ষকদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ও তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই নীতিমালা অনুমোদন পেলে নতুন করে কোনো অশিক্ষক মাঠপর্যায়ের শিক্ষা প্রশাসনে যুক্ত হবেন না।
প্রস্তাবিত নীতিমালা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকরা তিন বছরের জন্য প্রশাসনে নিয়োগ পাবেন। তিন বছর পূর্ণ হলে তারা আবার স্কুলে শিক্ষকতায় ফিরে যাবেন। তবে তাদের মধ্য থেকেই অভিজ্ঞতা ও পদোন্নতির অবস্থা বিবেচনায় পর্যায়ক্রমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার থেকে উচ্চপর্যায় পদোন্নতি দেয়া হবে। বর্তমানে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সহকারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তা পদে যথাক্রমে সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক পদায়নের ব্যবস্থা কার্যকর আছে। এসব শিক্ষকের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) উপপরিচালক নিয়োগের রেওয়াজ আছে। বর্তমানে মাউশিতে এ ধরনের দু’জন কর্মকর্তা নিযুক্ত আছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট