বিনোদনের খবর: নানামাত্রিক বাধা ও জটিলতার কারণে বাংলাদেশে আর বিনিয়োগ করবে না এসকে মুভিজ। প্রতিষ্ঠানটি এদেশ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছে। আগামীতে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় আর কোনো সিনেমাও নির্মাণ করবে না প্রতিষ্ঠানটি। এমনকি এসকে মুভিজের প্রযোজনায় আগামীতে কলকাতার লোকাল প্রোডাকশনেও কোনো ছবিতে থাকছেন না বাংলাদেশের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান।
বুধবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে কলকাতা থেকে মুঠোফোনে এসব কথা জানান এসকে মুভিজের কর্ণধার অশোক ধানুকা।
কলকাতার বাংলা ছবির নামী এই প্রযোজক বলেন, বাংলাদেশে কাজ করতে গেলে পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। এত বাধা আর প্রেসার নিয়ে ভালো কাজ করা সম্ভব না। বাংলাদেশে অনেক সংগঠন আছে যেগুলোর কাজ করতে গেলেই বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যৌথ প্রযোজনায় নতুন নীতিমালা হয়েছে। ওই নীতিমালা মেনে ছবি নির্মাণ সম্ভব না। অশোক ধানুকা বলেন, বাংলাদেশে সিনেমা মুক্তি দিতে গেলে আইন আদালত করতে হয়। শুধু শুধু এতো দৌড়ঝাঁপ করেও ছবি ঠিকমত চালাতে পারিনা। আবদুল আজিজ তার মেশিনে আমার ছবি চালাতে আপত্তি তোলেন। ছবি চালিয়েও ঠিকমত টাকা তুলতে পারিনা। তাহলে কেন আমি শুধু শুধু এতো চাপ নেব? কলকাতায় কাজের অনেক সুযোগ আছে। বাংলাদেশে ছবি না চালাতে পারলেও আমার অসুবিধা হবে না।
অশোক ধানুকা বলেন, বাংলাদেশের কিছু মানুষ মনে করে আমি ওদেশ থেকে সব টাকা লুটে নিচ্ছি। কিন্তু আসল ব্যাপার হলো, যৌথ প্রযোজনায় বাংলাদেশে যত ছবি হিট করেছেন সবগুলোতে আমার লস হয়েছে। মানুষের মুখে মুখে শুধু ছবি হিট হয়েছে। সব ছবির মধ্যে ‘ভাইজান এলো রে’ এক্সট্রা-অর্ডিনারি ছিল। কিন্তু আমি সেভাবে টাকা পাইনি।
শাকিবের সঙ্গেও আপাতত কোনো ছবি হচ্ছে না জানিয়ে অশোক ধানুকা বলেন, শাকিবের সঙ্গে আপাতত আর কাজ হচ্ছে না। শ্রাবন্তীর সঙ্গে একটা ছবি করার কথা থাকলেও সেটা বাতিল। কলকাতার লোকাল প্রোডাকশনে শাকিবকে নিয়ে ছবি বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শাকিবকে ৬০ লাখ টাকা সম্মানী দিয়ে কাজ করানো আমার পক্ষে সম্ভব না।
এদিকে, বাংলাদেশে ব্যবসার জন্য ইস্কাটনে অফিস নিয়েছিলেন অশোক ধানুকা। নাম দিয়েছিলেন এসকে মুভিজ ইন্টারন্যাশনাল। বললেন, অফিস ওভাবে থাকুক। পাঁচ বছর পর ভেবে দেখবো কি করা যায়!
শোনা গিয়েছিলেন, বাংলাদেশের সিনেমা হলে ডিজিটাল মেশিন বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিল এসকে মুভিজ। এ প্রসঙ্গে অশোক ধানুকা বলেন, লাইভ টেকনোলজিস ও আমি (এসকে মুভিজ) এক সঙ্গে করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত থেকেও সরে এসেছি। এত ঝামেলা করে কাজ করার দরকার আছে বলে আমি মনে করিনা।
বাংলাদেশ থেকে সিনেমা ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার খবর আগেও একবার শোনা গিয়েছিলো ‘এসকে মুভিজ’-এর ক্ষেত্রে। কিন্তু এরপরেও একাধিক যৌথপ্রযোজনার ছবিতে অর্থায়ন করেছে এই প্রযোজনা সংস্থাটি। এমনটা মনে করিয়ে দেয়ার অশোক ধানুকা বলেন, না, আমরা একের পর এক লস দিয়ে যাচ্ছি। এভাবে ব্যবসা টিকে থাকতে পারে না। ভারতে সিনেমার জন্য আমাদের বিশাল বাজার, সেই বাজার ছেড়ে এখানে এসে আমি ক্রমাগত লস করতে পারবো না। ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকছি।