দেশের খবর: মানব সম্পদ উন্নয়নে বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। একটি শিশুর শিক্ষার সুযোগ, স্বাস্থ্য সেবা এবং টিকে থাকার সক্ষমতা বিচার করে ভবিষ্যতে তার উৎপাদনশীলতা এবং আয়ের সম্ভাবনা নিয়ে এই সূচক তৈরি করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।
‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংক হিউম্যান ক্যাপিটাল ইনডেক্স’ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে ভালো করছে। তবে বাংলাদেশে শিশুদের খর্বাকায় অবস্থা এবং মানসম্পন্ন শিক্ষার অভাবে শিশুদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য সেবা যে অবস্থায় রয়েছে তাতে জন্ম নেয়া একটি শিশুর মাত্র ৪৮ ভাগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে।
পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার, শিশুদের স্কুলে যাওয়ার গড় সময়, শিক্ষার মান, প্রাপ্তবয়স্কদের অন্তত ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত টিকে থাকার হার এবং শিশুদের সঠিক আকারে বেড়ে ওঠার হার-এই পাঁচটি মানদণ্ড ব্যবহার করা হয়েছে সূচক তৈরির ক্ষেত্রে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে জন্ম নেয়া ৫৬ ভাগ শিশু তাদের এক জীবনে যে উপার্জনের সম্ভাবনা রয়েছে তার অর্ধেকও পূরণ করতে পারবে না। কারণ দেশগুলোর সরকার এই শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানের জন্য পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করছে না। মানবসম্পদ গঠনের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্ঞান, দক্ষতা বৃদ্ধি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম উল্লেখ করেছেন, টেকসই ও অন্তর্ভূক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য মানবসম্পদ মূল চালিকা শক্তি। কিন্তু সেভাবে শিক্ষা ও স্বাস্থে বিনিয়োগ হচ্ছে না।
১৫৮টি দেশের সূচকগুলো সমন্বিত করে একটি স্কোর তৈরি করা হয়েছে। যে দেশের স্কোর ১ এর কাছাকাছি সে দেশ তত এগিয়ে রয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, এতে বাংলাদেশের সম্মিলিত স্কোর শূন্য দশমিক ৪৮। ভারতে শূন্য দশমিক ৪৪, পাকিস্তানে শূন্য দশমিক ৩৯, মিয়ানমারে শূন্য দশমিক ৪৭। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার স্কোর শূন্য দশমিক ৫৮, আর নেপালে শূন্য দশমিক ৪৯। সূচকের শীর্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে সিঙ্গাপুরের স্কোর শূন্য দশমিক ৯০। অন্যদিকে কানাডা শূন্য দশমিক ৮১, জার্মানি শূন্য দশমিক ৮০, যুক্তরাজ্যে শূন্য দশমিক ৭৯, যুক্তরাষ্ট্র শূন্য দশমিক ৭৬, রাশিয়ায় শূন্য দশমিক ৭৮, চীন শূন্য দশমিক ৬৭।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচ বছরের বেশি বয়স পর্যন্ত টিকে যাওয়া শিশুর হার ৯৭ শতাংশ। ভারতে এই হার ৯৬ শতাংশ, পাকিস্তানে ৯৩ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৯৯ শতাংশ। বাংলাদেশে একটি শিশু ১৮ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত গড়ে ১১ বছর স্কুলে কাটায়। ভারতের ক্ষেত্রে এই সময় গড়ে ১০.২ বছর, পাকিস্তানে ৮.৮ বছর, শ্রীলঙ্কায় ১৩ বছর।
পূর্ববর্তী পোস্ট