বিনোদনের খবর: নিজের মূল কাজ ক্যামেরার পেছনে। সমানভাবে ক্যামেরার সামনেও কাজ করেন আয়শা মনিকা।
যেটা অনেকের অজানা, পরিচালনা ও অভিনয়ের বাইরেও কিছু কাজ করেন এই শিল্পী। আর সেটা হলো বাচ্চাদের অভিভাবক হওয়া! নিরাপত্তাহীন ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য নানারকম শিক্ষা ও বিনোদনমূলক আয়োজনে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তিনি।
এসব শিশুকে নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশ স্ট্রিট কিডস এইড-এর কান্ট্রি ডিরেক্টরের পদটিতেও আছেন এই অভিনেত্রী।
বিষয়টি নিয়ে মনিকা বলেন, ‘২০০৭ সালে এক আমেরিকান ছাত্রী কক্সবাজারে সার্ফিং করতে আসেন। তার নাম সুজি হ্যালসেল। তখনই তার চোখে পড়ে কক্সবাজারের অসহায়, সম্বলহীন কয়েকটি পথশিশু। তার কাছে থাকা টাকা দিয়ে তাদের সাহায্য করেন। এরপর ফিরে যান ক্যালিফোর্নিয়ায়। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি জব করতেন। তার আয় করা বেশিরভাগই এদেশের শিশুদের জন্য জমাতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশে ফিরে এসে এদের জন্য কাজ করতে থাকেন। সুজির এই উদ্যোগের কথা শুনে ২০১৫ সালে আমি তার সঙ্গে দেখা করি। এরপর নিজেও এ কাজে যুক্ত হই।’
নিজের কাজ প্রসঙ্গে আয়শা মনিকা বলেন, ‘আমাদের মূল কাজ ঝুঁকিপূর্ণ এ শিশুদের দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচিয়ে সুস্থ জীবনে ফেরার সাপোর্ট দেওয়া। মূলত মাদক এখানে বড় চ্যালেঞ্জ। এই শিশুরা ড্যান্ডি নামের মাদকে আসক্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। আমরা চাইছি সবাইকে না পারলে অন্তত কিছু শিশুকে হলেও মাদকের হাত থেকে রক্ষা করে শিক্ষা দিতে। এজন্য নিয়মিত আঁকাআঁকি ও খেলাধুলায় যুক্ত রাখা হয় তাদের। বিশেষ করে স্কেটিং-সার্ফিং প্রশিক্ষণ দিই। এছাড়াও পরিবারকে দেওয়ার জন্য এদের হাতে কিছু টাকা দেওয়া হয়, যেন বাবা-মা’রা তাদের সন্তানদের স্কুল বাদ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে যুক্ত না রাখেন।’
বাংলাদেশ স্ট্রিট কিডস এইড ঢাকার বেশ কয়েকটি বস্তি ও কক্সবাজারের শিশুদের নিয়ে কাজ করছে। শতাধিক ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের নানাভাবে সহায়তা দিয়ে আসছেন তারা।
মনিকা জানান, বাংলাদেশ স্ট্রিট কিডস এইড-এর পরিকল্পনাও অনেক বড়। পথশিশুদের জন্য আবাসিক শিক্ষাব্যবস্থাও করতে চান তারা। এজন্য কাজও অনেক এগিয়েছে বলে জানান এই শিল্পী।
আয়শা মনিকা দীর্ঘদিন ধরে নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিমের সহকারী হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০৯ সালে রেহানা সামদানীর ‘হারায়ে খুঁজি’ নাটকের মধ্য দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক হয় তার। এরপর একে একে অভিনয় করেছেন বেশ কয়েকটি নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্রেও। ২০১০ সালে পিংকসিটির বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে অভিষেক ঘটে মনিকার। তার আলোচিত কাজের মধ্যে আছে গ্রামীণফোনের ১৫ বছর পূর্তির বিজ্ঞাপনচিত্রটি। বর্তমানে তিনি বিবিসি মিডিয়ায় নির্মাতা হিসেবে কাজ করছেন।