বিদেশের খবর: ইরানের ওপর কার্যকর হল মার্কিন নিষেধাজ্ঞা। সোমবার থেকে কার্যকর হওয়া এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘সর্বকালের কঠিনতম’ বলে উল্লেখ করেছে মার্কিন প্রশাসন। প্রধানত তেল রফতানি ও জাহাজ শিল্প এবং ব্যাংক-বীমা টার্গেট করা হয়েছে।
এটা শুধু তেহরানের ওপরই নয়, চীন, রাশিয়ার মতো যেসব রাষ্ট্র তাদের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক রাখছে তাদের ওপরও প্রযোজ্য হবে। তবে ইরানি তেল ক্রয়ের ক্ষেত্রে ভারত, তুরস্ক ও জাপানের মতো মিত্ররাষ্ট্রগুলোকে ছাড় দেয়া হবে।
অবরোধের এ সূচনাকে ‘ঐতিহাসিক দিন’ বলে অভিহিত করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ওয়াশিংটনের এ পদক্ষেপে চরম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
অবরোধ ভেস্তে দেয়ার ডাক দিয়ে সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘তেল বিক্রি চলবেই।’ ইরানের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অবরোধের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সসহ পরমাণু চুক্তির অন্য পক্ষগুলো।
টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, ‘আমি ঘোষণা দিচ্ছি, আমাদের তেল রফতানি অব্যাহত থাকবে। আমরা ভালোভাবেই অন্যায় ও অবৈধ এই অবরোধ এড়িয়ে যেতে পারব।
কারণ এই অবরোধ আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রয়েছি। একটা দুর্বৃত্ত শক্তির মোকাবেলা করছি।’
অবরোধের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ইরানের সর্বস্তরের জনগণ। সোমবার তেহরানে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার মানুষ। পুরুষদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে সেখানে ট্রাম্প ও যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী নানা স্লোগান দেয় নারীরাও।
আলজাজিরা জানায়, ২০১৫ সালে ইরান পরমাণু চুক্তির পর যেসব অবরোধ তুলে নিয়ে হয়েছিল সেগুলোই ফের বহাল করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে নতুন করে ইরানের তেল, জাহাজ শিল্প, ব্যাংক-বীমাসহ অন্যান্য খাতের অন্তত ৩০০ কোম্পানিকে নিষিদ্ধ তালিকায় যোগ করা হয়েছে। তেহরানের সঙ্গে বহুজাতিক পরমাণু চুক্তি থেকে গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সেই সঙ্গে আগের সব অবরোধ পুনর্বহালের ঘোষণা দেন। এর ছয় মাসের মাথায় তা কার্যকর হল। ইরানি তেলের রফতানি ‘শূন্যের কোঠায়’ নামিয়ে আনার জন্য মিত্র রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।