দেশের খবর: সাধারণ মানুষের মুখে ‘গাদ্দার-বেইমান’ গালাগাল শুনলেন একাত্তরের রণাঙ্গনের যোদ্ধা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। মানুষ বলে ওঠে, ‘আপনারে সম্মান করতাম। এখন করিনা। বঙ্গবন্ধুকে জিয়ার সঙ্গে তুলনা করেন ক্যান? বঙ্গবন্ধু আর জিয়া এক না?
রাজশাহীতে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ শেষে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন তার গাড়ি বহর নিয়ে। তার গাড়ি বহরে ৫টি গাড়ি ছিল। তার গাড়ি ছিল সবার সামনে। সমাবেশ থেকে ফেরার পরে কুমারপাড়া রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে দিয়ে যাবার সময় ‘গাদ্দার-বেইমান’ শব্দ শুনতে পেয়ে গাড়ি থেকে নেমে আসেন তিনি। তার গাড়ি বহরের লোকজন তার পাশে অবস্থান নেন। তাদের মাথায় লাল গামছা বাঁধা ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গাড়ি বহর থামিয়ে নেমে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে নেতা-কর্মীদের কাছে গিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘কে গালি দিয়েছে আমাকে। আমি বঙ্গবন্ধুর যোদ্ধা।’ এসময় উপস্থিত সাধারণ মানুষ কাদের সিদ্দিকীকে উদ্দেশ্য করে ফের বলেন, ‘আপনি একটা বেইমান, দালাল। আপনি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর তুলনা করেছেন। আপনাকে আমরা সম্মান করতাম এখন ঘৃণা করি।’
এসময় কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে থাকা লোকজনকে কোমরে হাত দিতে দেখা যায়। তবে সেখানে কর্মরত পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শী মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মহমুদ হাসান রাজিব বলেন, সমাবেশ থেকে ফেরার পথে কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে নেতাকর্মীদের দেখে গাড়ি থামিয়ে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেন। এসময় সাধারণ মানুষ তার প্রতিবাদ করেন। তিনি উত্তেজিত হয়ে তার কমোরে থাকা পিস্তল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পরে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের কিছু ছেলে গালাগালি করছিল। লোক জড়ো হয়েছিল। পরে আমরা চলে এসেছি। আমি সারাজীবন দেশের জন্য কাজ করেছি। বঙ্গবন্ধুকেই বাংলাদেশ মনে করি, ভালোবাসি। আমাকে গালি দেয়া মানে বঙ্গবন্ধুকে গালি দেয়া। বঙ্গবন্ধুকে জিয়াউর রহমানের সাথে এক করিনি। বঙ্গবন্ধু দেশের নেতা, জাতির পিতা। আমরা তার সন্তান। দুই রহমানকে দ্বিখণ্ডিত করে যারা ফয়দা লুটে, আমি তাদের দুরত্বটা কমিয়ে দিতে চেয়েছি সমাবেশে আমার বক্তব্যে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর জিয়াউর রহমানের যে দ্বন্দ্ব, এই দ্বন্দ্ব পুঁজি করে যারা দেশকে লুটেপুটে খাচ্ছে, আল্লাহ যদি আমাকে দুই বছর সময় দেয়-তাহলে শেখ মুজিব আর জিয়াউর রহমানের দ্বন্দ্ব আমি ঘুচিয়ে দেব ইনশাল্লাহ।’