দেশের খবর: একাদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের পর থেকে পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্রবাহিনীর ছোট ছোট টিম কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।
সশস্ত্রবাহিনীর এ টিমটি পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে বলেও জানান তিনি। তবে ১৫ ডিসেম্বররের পর ঠিক কোন দিন থেকে এ টিম কাজ করবে তা নির্দিষ্ট করেননি সিইসি।
বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) সকাল পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে পুলিশের সহযোগিতা কামনা করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর একটি ছোট টিম আপনাদের সঙ্গে দেখা করবে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে প্রতি জেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ছোট টিম থাকবে, তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন।’
পুলিশ প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে সিইসি আরও বলেন, ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের তথ্য সংগ্রহ করার কথা আমরা বলিনি। এটা আপনারা করবেন না। কারণ এটা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে। যারা ভোটগ্রহণ করর্মকর্তা তারা বিব্রত হন। আমরা এটা চাইনা।’
১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে সিইসি বলেন, ‘যদি তথ্য সংগ্রহ করার প্রয়োজন হয় তাহলে কোনো ব্যক্তির তথ্য গোপন সূত্র ব্যবহার করে সংগ্রহ করতে পারেন। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞেস করার দরকার নেই। এটা আমরা চাই না।’
‘একই সঙ্গে তফসিল ঘোষণার পর কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করবেন না। মামলা করবেন না। কাউকে হয়রানিমূলক মামলা বা গ্রেফতার করা যাবে না। আশা করি আপনারা এটা করছেনও না।’
সিইসি আরও বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কারণে যেনো নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখবেন।’
সিইসি বলেন, ‘এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সব দল অংশ নিবে। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি একা করা সম্ভব নয়। প্রজাতন্ত্রের সকলে মিলেই নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কাজ করবো। নির্বাচনের সিংহভাগ দায়িত্ব পুলিশের থাকে। ভোটারের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে সব ধরনের নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনাদের ওপরই বেশি থাকে।’
‘নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা রোধ করাও আপনাদের দায়িত্ব। ঐতিহ্যগতভাবেই এই দায়িত্বও আপনাদের। এবারো দেশের বৃহত্তম স্বার্থে আপনারা দায়িত্ব পালন করবেন। সংবিধান মতে কর্তৃত্ব নয়, বিবেক মতে কাজ করতে হবে। প্রজাতন্ত্রের সকলে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করবে। আমরা কারো উপর কর্তৃত্ব করবো না। নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তার বিষয়ে সংবিধানে যেমন বলা আছে।’
সিইসি আরও বলেন, ‘নির্বাচন যেন কোনভাবে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব পালনে আমরা পূর্ণস্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। তবে কমিশন আপনাদের কর্মকাণ্ড নজরদারি করবে। অলরেডি অভিযোগ আসা শুরু করেছে। তবে, নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করবেন। ভালভাবে যাচাই না করে আপনাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না। এতে আপনাদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলার বিভিন্ন পর্যায়ের তথ্য একমাত্র পুলিশেরই আছে। তাই বিভিন্ন বাহিনী পুলিশের কাছ থেকেই পরামর্শ নিবে। পুলিশকে এখনই কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে বলেও জানান সিইসি।
সভায় চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, আইজিপি, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।