অনলাইন ডেস্ক: ভুয়া পাসপোর্ট ও কাগজপত্র ব্যবহার করে সৌদি আরবে পাড়ি জমানো কয়েকশ সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে রিয়াদ। আসামের কারাগার থেকে পাঁচ রোহিঙ্গা মুসলিমের একটি পরিবারকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কয়েকদিন পর সৌদি আরব আটক রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জেদ্দার শুমাইসি ডিটেনশন সেন্টারে পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে বন্দি রয়েছেন এই রোহিঙ্গারা। তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে রোববার থেকে জোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সৌদি আরব।
শুমাইসি আটক কেন্দ্রে থাকা রোহিঙ্গারা মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইকে একটি ভিডিও ফুটেজ ও কয়েকটি অডিও রেকর্ড পাঠিয়েছে। এতে রোহিঙ্গা এক যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘গত ছয় বছর ধরে তিনি সৌদি আরবে রয়েছেন এবং এখন তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে; যেখানে তিনি অন্যান্য রোহিঙ্গাদের মতো শরণার্থী হবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমি গত পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে এখানে রয়েছি। কিন্তু তারা এখন আমাকে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে। দয়া করে, আমার জন্য প্রার্থনা করুন।’ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিরোধিতা করায় তাদের কয়েকজনকে হাতকড়া পরে রাখা হয়েছে বলে জানায় ওই যুবক।
রোহিঙ্গাদের পাঠানো অপর একটি অডিওতে শোনা যায়, ‘তারা (ডিটনেশন সেন্টারের কর্মকর্তারা) মাঝ রাতে আমাদের সেলে এসে ব্যাগ গোছাতে এবং বাংলাদেশে ফেরতের জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন। তারা অামাকে হাতকড়া পরিয়েছে এবং এখন আমরা অপেক্ষায় রয়েছি।’
রোহিঙ্গা মানবাধিকার কর্মী ন্যা স্যা এলউইন বলেন, বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পরিবর্তে সৌদি আরব যদি এই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মুক্তি দেয়, তাহলে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে থাকা পরিবারের সদস্যদের সহায়তা করতে পারবেন তারা।
‘তারা অপরাধী নয় যে, তাদের হাতকড়া পরাতে হবে। সৌদি কর্তৃপক্ষ তাদেরকে অপরাধী হিসেবে দেখছে; যা আমাকে খুবই মর্মাহত করেছে। এখন তাদের শরণার্থী শিবিরে পাঠানো হবে এবং বাংলাদেশে শরণার্থীদের সংখ্যা বাড়বে।’
বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে সৌদি আরবে পাড়ি জমানো অনেক রোহিঙ্গা জেদ্দার শুমাইসি ডিটেনশন সেন্টারে আটকা রয়েছেন। তবে এদের মধ্যে অনেকেই ভুটান, ভারত, পাকিস্তান এবং নেপালের পাসপোর্ট ব্যবহার করেও সৌদি আরবে গেছেন।
গত ৩ জানুয়ারি পাঁচ রোহিঙ্গার একটি পরিবারকে আসামের কারাগার থেকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠায় ভারত। তার একদিন আগে হরিয়ানার আম্বালা কারাগার থেকে এক রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
সূত্র : মিডল ইস্ট আই।