ভিন্নরকম সংবাদ: মাহবুর রহমান রাজু, চকবাজারে কাপড় ব্যবসা করতেন। পারিবারিকভাবেই গত ২৮ জানুয়ারি আফরুজা সুলতানা স্মৃতিকে বিয়ে করেছিলেন। স্মৃতির বাবা আবুল খায়ের দেখে শুনেই মেয়েকে রাজুর সঙ্গে বেশ ধুমধাম বিয়ে দেন । বুধবার রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টার ভয়াবহ আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয় রাজু ও তার ছোট ভাই মাসুদ রানা। হাতে মেহেদির দাগ মুছে যাবার আগেই বিধবা হতে হলো স্মৃতিকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে লাশ শনাক্ত করতে এসে সাংবাদিকদের স্মৃতির বাবা আবুল খায়ের বলেন, আগুনের খবর মোবাইলে পেয়ে ছুটে আসি। কিন্তু দোকানের কাছেই যেতে পারিনি। পরে শুনেছি ওরা আগুনের ভয়ে দোকানের সাটার বন্ধ করে দিয়েছিল। আর বের হতে পারেনি। ওখানেই পুড়ে অঙ্গার হয় রাজু ও তার ছোট ভাই মাসুদ রানা।
চোখের পানি মুছতে মুছতে তিনি বলেন, , এই ছিল কপালে! কত আয়োজন করে বন্ধু সাহেব উল্লাহর ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস মাস না যেতেই মা (মেয়ে) আমার বিধবা হলো। মেয়ের সামনে আমি কী করে দাঁড়াব।’ আবুল খায়ের বলেন, আগুন লাগার আধাঘণ্টা আগেও রাজুর মা দেখা করে গেছেন। বেহাই (রাজুর বাবা) টাকা নিয়ে গেছে।
স্মৃতির বাবা বলেন, সরকারের উচিত এসব বিষয় খেয়াল রাখা। যেখানে সেখানে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটবে আর মারা যাবে সাধারণ মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত হব আমরা। সিলিন্ডার ব্যবসা বন্ধ করা উচিত, কড়া নজরদারিতে রাখা উচিত।
তিনি জানান, তার মেয়ে স্মৃতি শোকে পাথরের মতো হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকবার মুর্ছা গেছে। তাকে দেখতে বাসায় চিকিৎসক ডাকতে হয়েছে।
পরিবারিক সুত্রে জানা যায়, রাজুরা তিন ভাই। রানা টেলিকম নামে তাদের দোকান ছিল। সেখানে ফোন-ফ্যাক্সসহ মোবাইল সরঞ্জাম বিক্রি করতেন তারা। ছোট্ট ভাই, বাবা-মাকে নিয়ে পাশের একটা ভবনে থাকতেন তারা।
আগুন পুড়ে অঙ্গার হওয়ায় অনেক মরদেহ শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তবে রাজু আর রানাকে স্বজনরা শনাক্ত করেছেন। রাজুর মরদেহের সিরিয়াল ৪০, রানার ১২। মরদেহ নিয়ে গ্রামেরবাড়ি যাব। সেখানেই দাফন হবে।