দেশের খবর: বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘অস্বাভাবিক রকমের একপেশে’ ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির নিয়ে প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর এক প্রতিবেদনে। গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই নির্বাচনে ভোটবাক্সে ব্যালট ভরা, বিরোধী দলের পোলিং এজেন্ট ও সাধারণ ভোটারদের হুমকি দেওয়াসহ নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও প্রতিবেদনটি কংগ্রেসে উপস্থাপন করেন। একই দিন এটি মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনের বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, সাংবিধানিকভাবে বাংলাদেশে সংসদীয় ধারার সরকার থাকলেও কার্যত বেশিরভাগ ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের হাতেই থাকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত অস্বাভাবিক রকমের একপেশে নির্বাচনে টানা তৃতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়, যে নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি।
এছাড়া নির্বাচনে ব্যালট-ডাকাতি ও বিরোধীদলীয় পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ ওঠে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচনের প্রচারণা ঘিরে হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন, গণগ্রেফতার ও সহিংসতার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ ওঠে, যে কারণে বিরোধী শিবিরের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের পক্ষে অবাধে বৈঠক-সমাবেশ করা ও নির্বাচনী প্রচারণা চালানো কঠিন হয়ে পড়ে।
নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, একটি বিশ্বাসযোগ্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষণ মিশন পরিচালনার জন্য যে সময়সীমা প্রয়োজন সেই সময়সীমার মধ্যে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের অনুমোদন ও ভিসা দেওয়া হয়নি। এছাড়া অভ্যন্তরীণভাবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বেসরকারি ২২টি ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের মধ্যে মাত্র ৭টিকে অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। এক্ষেত্রে চীন ও ইরানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনে অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে এগিয়ে চীন। আর ইরানের মানবাধিকার পরিস্থিতি ‘চরম খারাপ’।