সৌরজগতে পৃথিবীর আকৃতির সাতটি গ্রহ আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সৌরজগতের নিকটবর্তী একটি নক্ষত্রকে ঘিরে এই সাতটি গ্রহ ঘূর্ণায়মান রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এ সাতটি গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে মনে করছেন। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জার্নাল ন্যাচার এ সাতটি গ্রহ আবিষ্কারের খবর প্রকাশ করেছে।
জার্নাল ন্যাচারে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, নাসার স্পিটজার স্পেস টেলিস্কোপ ও বেশ কয়েকটি ভূমি-ভিত্তিক পর্যালোচক সংস্থা এসব গ্রহের সন্ধান পেয়েছে। এ সাতটি গ্রহ পৃথিবী থেকে ৪০ আলোকবর্ষ দূরে একটি নক্ষত্রকে ঘিরে আবর্তন করছে।
এ আবিষ্কার জ্যেতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিরল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, গ্রহগুলোর আকৃতি পৃথিবীর মতোই এবং সেগুলোতে পানির অস্তিত্ব থাকতে পারে। পানির অস্তিত্ব থাকার ফলে গ্রহগুলোর আবহাওয়া প্রাণের জন্য উপযুক্ত হতে পারে।
গবেষকদের মতে, সাতটি গ্রহের পৃষ্ঠতে তরল পানির স্তর থাকতে পারে। তবে সাতটির মধ্যে তিনটি গ্রহ প্রাণের বা বসবাসের উপযুক্ত হতে পারে।
এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বেলজিয়ামের ইউনিভার্সিটি অব লিজ-এর জ্যোতির্বিদ মাইকেল গিলন। তিনি বলেন, এই গ্রহগুলো একে অপরের অনেক কাছাকাছি এবং নক্ষত্রের খুব কাছে, যা বৃহস্পতি গ্রহের চারপাশে চাঁদের কথা মনে করিয়ে দেয়।
গিলন আরও বলেন, এখনও নক্ষত্রটি অনেক ছোট এবং শীতল সাতটি গ্রহই নাতিশীতোষ্ণ। যার অর্থ দাঁড়ায় গৃহপৃষ্ঠে তরল পানি রয়েছে এবং সম্ভবত প্রাণের অস্তিত্বও রয়েছে।
শীতল ও ক্ষুদ্রাকৃতির নক্ষত্রটির নাম দেওয়া হয়েছে ট্র্যাপিস্ট-১। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, ট্র্যাপিস্ট-১ নক্ষত্রের ই, এফ ও জি নামের তিনটি গ্রহ বাসযোগ্য এবং সেগুলোতে মহাসাগরও থাকতে পারে। এখানে বাসযোগ্য বলতে কোনও নক্ষত্রের চারপাশে ঘূর্ণায়মান গ্রহদের অবস্থানের এমন একটি এলাকা বোঝানো হয়, যে অবস্থানে থাকলে ওই গ্রহ বা গ্রহ পৃষ্ঠে তরল পানি থাকার সম্ভাবনা থাকে।
বিজ্ঞানীরা জানান, টেলিস্কোপের সাহায্যে এসব গ্রহের বায়ুমণ্ডলীয় পরিস্থিতি গবেষণা করা যাবে।
সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব বার্ন-এর অধ্যাপক ব্রিস-অলিভিয়ার ডেমোরি জানান, এসব গ্রহের কোনোটির ওজোন স্তরে অণূর অস্তিত্ব থাকলে তা জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ দিয়েই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। এর অর্থ দাঁড়াবে ওই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে।
সহ-গবেষক ও ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ-এর জ্যোতির্বিজ্ঞানী আমাউরি ট্রিউড বলেন, এটা বলাই সঠিক হবে যে, আমরা খুব বেশি জানি না। বাসযোগ্য হওয়ার অনেক কিছুই পাল্টে যেতে পারে। প্রথমত এবং সবার আগে আমাদের পর্যালোচনা করা দরকার। সূত্র: বিবিসি।