নিজস্ব প্রতিনিধি : জাতীয় দৈনিক ভোরের ‘পাতা’র ওয়েব সাইডে সাতক্ষীরা -৪ আসনের সাংসদ এসএম জগলুল হায়দার ও ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশ করায় ওই পত্রিকার সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধির নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাজাট গ্রামের শেখ সুজন বৃহষ্পতিবার সাতক্ষীরার আমলী আদালত-৫ এ এ মামলা দায়ের করেন। বিচারক ইয়াসমিন নাহার তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পুলিশ ব্যুরো ইনভেসটিগেশনের(পিবিআই) খুলনার পুলিশ সুপারকে এ নির্দেশ দেন।
মামলার আসামীরা হলেন দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ড.কাজী এরতেজা হাসান জজ ও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক উৎপল দাস।
শেখ সুজনের দায়েরকৃত মামলা থেকে জানা যায়, গত ৯ জুনের দৈনিক ভোরের পাতার ওয়েব সাইডে“ ছাত্রলীগ নিয়ে উন্মাদ হয়েছে এমপি জগলুল হালদার” শীর্ষক প্রতিবেদনে দেশের সকল সংসদ সদস্যের মধ্যে অতি আঁতলেমির কারণে সমালোচিত এমপি জগলুল হায়দার এবার শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে নিজের পছন্দের লোক বসাতে না পেরে উন্মাদ হয়ে গেছেন। সাতক্ষীরা ৪ আসনের এই এমপি দীর্ঘ সময় ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রক ছিলেন। কিন্তু জগলুল হায়দারের পছন্দের তিনজন বিতর্কিত প্রার্থীকে বাদ দিয়ে গত ৭ জুন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা এবং সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিক স্বাক্ষরিত ২ সদস্যের শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি অনুমোদন পায়। সভাপতি হিসেবে সাগর মণ্ডল ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমানের নাম ঘোষণা করায় সংসদ সদস্য জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে নানাভাবে প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি এলাকায় নিজের ঘনিষ্ঠ লোকদের কাছে বলে বেড়াচ্ছেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে তিনি ৩ লাখ টাকা দিয়েছিলেন, শ্যামনগর কমিটি করার জন্য। কিন্তু রাব্বানী টাকা নিয়েও সেই কাজ করেননি।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ছাত্রলীগের শ্যামনগর উপজেলা কমিটিতে এমপি জগলুল হায়দারের পছন্দের তালিকায় ৩ জন ছাত্রলীগ নেতার নাম ছিল। তাদের মধ্য থেকে যেকোনো দুইজনকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হলেই তিনি খুশি থাকবেন। কিন্তু তার পছন্দের তালিকার শীর্ষে যে নামটি ছিল তা হচ্ছে- মাদকাসক্ত হাফিজুর রহমান হাফিজ। এরপর আব্দুল হাকিম সবুজ, যার বিরুদ্ধেও অভিযোগের শেষ নেই। শ্যামনগর ও সুন্দরবনে এমপি জগলুলের হয়ে চাঁদা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে সবুজের বিরুদ্ধে। এছাড়া বাবুল হোসেন ছিল এমপি জগলুলের তৃতীয় পছন্দের লোক। ২০১৩ সালে এই বাবুল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তরুণদলের মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন কমিটির সহ-সভাপতি পদে ছিলেন। সর্বশেষ যে ছাত্রলীগ নেতাকে নিয়ে চেষ্টা করেছিলেন এম পি জগলুল হায়দার তার নাম এস কে সুজন। তিন মাস আগেও মাছের ঘের দখল ও নারী ধর্ষণ মামলার আসামি হিসাবে জেল খেটেছেন। এসব কথার অধিকাংশই আপত্তিকর ও মানহানিকর যা’ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
শেখ সুজন বলেন, ধর্ষণ ও চাঁদা বাজির মামলায় তিনি জেলে যাননি। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তা ছাড়া এমপি সাহেব ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে যে সব কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫,২৯ ও ৩৫ ধারায় এ মামলা দায়ের করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার রেজাউল ইসলাম জানান, এসকে সুজনের দায়েরকৃত মামলার(সিআরপি-৮৮/১৯) আদেশসহ নথি আগামি রোববার পিবিআই খুলনা পুলিশ সুপার বরাবর পাঠানো হবে। তবে এ ব্যাপারে ড.কাজী এরতেজা হাসান জজ এর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ভোরের পাতার সম্পাদক ও প্রতিবেদকের নামে সাতক্ষীরায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
পূর্ববর্তী পোস্ট