দেশের খবর: সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের অপহৃত ভাগ্নে সৈয়দ ইফতেখার আলম সৌরভকে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার বটতলা বাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের ১১ দিন পর বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে অপহরণকারীরা একটা গাড়িতে করে তাকে সেখানে রেখে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে তারাকান্দা থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, সৌরভকে ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় ফেসবুক লাইভে এসে সোহেল তাজ জানান, তারাকান্দার একটি স্থানে সৌরভকে রেখে যায় অহরণকারীরা। সেখান থেকে পুলিশ সুপার গিয়ে তাকে নিয়ে এসেছেন। সৌরভকে এখন পুলিশ হেফাজতে ঢাকায় আনা হচ্ছে।
গত ৯ জুন সন্ধ্যায় চাকরি দেওয়ার নামে বাসা থেকে ডেকে এনে নগরের পাঁচলাইশ থানার আফমি প্লাজা এলাকা থেকে সৌরভকে অপহরণ করা হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। পরিবারের অভিযোগ, চট্টগ্রামের প্রভাবশালী পোশাক ব্যবসায়ী আবু সালেহ চৌধুরী আজাদের যোগসাজশে সৌরভকে অপহরণ করা হয়েছে। তার মেয়ের সঙ্গে সৌরভের প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে তিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এরপর গত সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেন সৌরভের বাবা সৈয়দ মো. ইদ্রিস আলম এবং মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান। এ সময় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘ন্যায় ও সুবিচারের রাষ্ট্রে কোনো নাগরিকেরই এমন পরিণতি কাম্য নয়। আজ আমার ভাগ্নে, কাল হয়তো আপনার ভাই, আরেকদিন আপনার সন্তান হতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সৌরভের মা সৈয়দা ইয়াসমিন আরজুমান জানান, ২০১৭ সালে সৌরভ ‘বেঙ্গলি বিউটি’ নামে একটি চলচ্চিত্র তৈরি করেন, যা দেশ-বিদেশে সুনাম কুড়ায়। এ সময় সওদা নামে এক তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা সংযুক্ত ছিলেন। এরপর সওদার বাবা তাকে অন্য পাত্রের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেন। ২০১৮ সালের এপ্রিলে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। এ জন্য সৌরভকে দায়ী করেন সওদার বাবা। তিনি সৌরভের পরিবারকেও হত্যার হুমকি দেন। নানাভাবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ও বাসায় গিয়ে সৌরভকে হয়রানি ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। সর্বশেষ গত ৯ জুন তাকে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ এলাকায় ডেকে নেওয়া হয়। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ আছেন।
এরপর বুধবার দুপুরে সৌরভের বাবা-মাকে নিয়ে লাইভে আসেন সোহেল তাজ। সৌরভের উদ্ধার অগ্রগতি নিয়ে বলেন, আজকে আমরা যে আপডেটা দিতে যাচ্ছি, গতকাল (মঙ্গলবার) রাত আড়াইটার দিকে আমার বোন আমাকে ফোন করে অবগত করেন যে, সৌরভের ফোন থেকে তাদের ফোনে কল এসেছে দুই-তিনবার। কিন্তু ওই সময় কারা ছিলেন, সেটা তারা শুনতে পাননি। তারা বোঝার অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ পাননি। এরপর তারা অনেকবার সৌরভের নাম্বারে কল করার জন্য চেষ্টা করেছেন। ফোন আসার ব্যাপারটি তারা ডিসি কাউন্টার টেরোরিজম, ডিসি নর্থ এবং ওসি পাঁচলাইশকে জানিয়েছি। ফোন ট্র্যাক করে সেটি কোথা থেকে এসেছে জানার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন বলে তারা জানিয়েছেন।