নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামিকাল ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে চতুর্দিকে সাজ সাজ রব উঠেছে। ইতিমধ্যে সাতক্ষীরা সাতটি উপজেলা এবং একটি পৌর কমিটির সম্মেলন ৮ ডিসেম্বর সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আগামিকালকের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তিন বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে দেশকে স্বাধীনতা এনে দেওয়া বাংলাদেশের প্রাচীনতম এই দলটির সাতক্ষীরা জেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হতে চাইছেন অনেকেই। তাদের মধ্যে গত ১৫ বছর ধরে সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগের প্রাণভোমরা হয়ে আছেন বর্তমান জেলা সাধারণ সস্পাদক ও সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম। তাকে বিবেচেনা করা হয় জেলার জনপ্রিয়তম রাজনীতিবিদ হিসেবে।তিনিই সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের প্রাণভোমরা। জেলা আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের কাছে তো বটেই এমনকি এ জেলার সাধারণ মানুষের কাছে তিনি প্রিয় রাজনীতিবিদ। তার সততা, দক্ষতা এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বিগত তিন দশক ধরে সাতক্ষীরার প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগের ইউনিটগুলো শক্তিশালী হিসেবে গড়ে উঠেছে। অসাধারণ ভদ্রতা এবং সৌজন্যতাবোধের কারণে তিনি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের প্রিয় নেতা হয়ে উঠেছেন। শত প্রতিকূলতা এবং প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সফলতম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজের এবং দলের জনপ্রিয়তাকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এবারের সম্মেলনেও তাকেই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় দেখতে চাইছেন সাতক্ষীরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
সাতক্ষীরাবাসীর প্রিয় নেতা আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের উত্তর ফিংড়ী গ্রামে ১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুল জব্বার ও মাতার নাম রিজিয়া সুলতানা। প্রথম জীবনে শিক্ষাকতার পাশাপাশি একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে জেলাসহ সর্বত্র। সাতক্ষীরা কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন। শৈশব থেকে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক। মুজিব আদর্শকে বুকে ধারণ করে তিনি ব্যবসার পাশাপাশি জনসেবায় আত্মনিয়োগ করেন।
১৯৮৪ সালে নজরুল ইসলাম আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হন। ১৯৯২ সালে তিনি ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ছাতা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। অবহেলিত ফিংড়ী ইউনিয়নকে গড়ে তোলেন তিলোত্তমা রূপে। ২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে রেকর্ডসংখ্যক ভোটের ব্যবধানে জামায়াতের প্রার্থীকে পরাজিত করেন তিনি। সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর তিনি স্বচ্ছতা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। সে কারণে তাকে সততার প্রতীক বলা হয়। অবহেলিত সাতক্ষীরা সদর উপজেলার প্রত্যেকটি জনপদকে গড়ে তোলেন উন্নয়নের মডেল হিসেবে। দুর্নীতিমুক্ত সদর উপজেলা পরিষদ গড়ে তুলে তিনি জননন্দিত হয়েছেন। ২০০৪ সালে তিনি সরাসরি কাউন্সিলরদের ভোটে বিপুল ব্যবধানে জিতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি দীর্ঘদিন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এবং সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম দফায় ২০০৪ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করেন। যে কারণে ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারির সম্মেলনেও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে পুনরায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন। ১৯৯৫ সালে ফিংড়ী ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি পদক। এছাড়া তিনি কাজী নজরুল স্বর্ণ পদক’ কবি জসিম উদ্দীন পদক’ মাদার তেঁরেসা পদকসহ অসংখ্য পদক ও পুরস্কার পেয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক। তার সহধর্মিণী মিসেস সালেহা ইসলাম শান্তি অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী, বর্তমানে গৃহিনী। বড় মেয়ে নূর জাহান জেসমিন বিবাহিত। বড় জামাতা জেলা ও দায়রা জজ। ছোট মেয়ে আইরিন পারভীন খুলনা রোটারি হাইস্কুলে শিক্ষকতা করে। ছোট জামাতা-কেডিএ’র সিনিয়র নির্বাহী প্রকৌশলী। একমাত্র ছেলে রাজু আহম্মেদ এমবিবিএস পাশ করে বর্তমানে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে সরকারি চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে একজন কর্মী হিসেবে তিনি বেকারমুক্ত, ক্ষুধাযুক্ত, মাদকমুক্ত, আধুনিক উন্নত সাতক্ষীরা গড়তে বদ্ধপরিকর। তাকে তৃতীয় মেয়াদে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দেখতে চান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতা-কর্মীরা।