দেশের খবর: ভারতের রাজ্যসভায় বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল বিপুল ভোটে পাস হওয়ার একদিনের মাথায় দেশটিতে জরুরি সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি দিল্লি আসছেন বলে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বুধবার রাতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি পাস হওয়ার ঘণ্টাকয়েক পরেই গভীর রাতের দিকে এ তথ্য জানায় দিল্লি।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ড. মোমেন দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে নামবেন। পরদিন শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি দিল্লি ডায়ালগ (একাদশ চ্যাপ্টার) ও ইন্ডিয়ান ওশান ডায়ালগের (চতুর্থ চ্যাপ্টার) যৌথ অধিবেশনের মন্ত্রী-পর্যায়ের সেশনে অংশ নেবেন এবং কি-নোট বক্তৃতা দেবেন।
শনিবার সকালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে দিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউসে এক বৈঠকে মিলিত হবেন । ওই দিন সন্ধ্যায় তার ঢাকা ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এবং ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানির মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে বুধবার নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, ভারত ঐতিহাসিকভাবে একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সেখান থেকে পদস্খলন হলে ভারতের যে ঐতিহাসিক অবস্থান, তা দুর্বল হয়ে যাবে।
গত সোমবার ভারতের লোকসভায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশসহ তিনটি প্রতিবেশী দেশের সংবিধানকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, এই দেশগুলোর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বলেই সেখানে অন্য ধর্মের মানুষরা নিপীড়িত হচ্ছেন।
ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ড. মোমেন বলেন, আমাদের দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, ধর্মীয় নির্যাতন হয় না। আমাদের দেশে ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। আমাদের দেশে অন্য ধর্মের কেউ নির্যাতিত হয় না। সম্প্রতি বিদেশ থেকে আমাদের অনেক লোক দেশে ফিরে আসছে তার কারণ হচ্ছে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছি। এখানে সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকারের অনেক বড় বড় সিদ্ধান্ত নেন, তারা অন্য ধর্মের লোক। আমরা সব ধর্মের মানুষকে সমানভাবে একই দৃষ্টিতে দেখি, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে। কে কোন ধর্মের সেটা নিয়ে আমরা কোনো বিচার করি না। বিচার করি যে, সে বাংলাদেশের নাগরিক কিনা বা তার যোগ্যতার মাপকাঠি। আমাদের সব রকমের চাকরি-বাকরিতে সব ধর্মের লোক রয়েছে, অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে আমরা তাদের দেখি।