দেশের খবর: কয়েকটি বিভাগ ও জেলার ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরেই এ পরিস্থিতি। বছরের শীতলতম মাস জানুয়ারি। সেই হিসাবে আগামী মাসে শীতের প্রকোপ আরও বৃদ্ধির পাশাপাশি এর ব্যাপ্তি এবং স্থায়িত্ব বেড়ে যাতে পারে। আবহাওয়া বিভাগ (বিএমডি) এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় তেঁতুলিয়ায় ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাই চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অন্যান্য স্থানে সর্বোচ্চ ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল।
ময়মনসিংহ বিভাগে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির মধ্যে আছে। একই অবস্থা সিলেট ও খুলনা বিভাগের বেশির ভাগ এলাকায়।
আবহাওয়াবিদদের মতে, তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বলে। তাপমাত্রা যদি ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামে তবে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। আর ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে বলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, শীতের অনুভূতি বৃদ্ধির ৯টি কারণ রয়েছে।
এগুলো হল- দেশের ওপর উচ্চচাপ বলয়ের বৃদ্ধি, হিমালয়ের দিক থেকে বাংলাদেশমুখী বায়ুপ্রবাহ, দিনের চেয়ে রাতের ব্যাপ্তিকাল বড় থাকা, বায়ু প্রবাহের গতি ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার, দিনে আকাশ মেঘলা ও রাতে মেঘমুক্ত থাকা, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়া এবং তা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসা, ঊর্ধ্ব আকাশে বাতাসের ভূপৃষ্ঠমুখী প্রবাহের প্রবণতা এবং ২-৩ দিন ধরে মধ্যরাত থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকা। তিনি বলেন, বর্তমানে এসব কারণের অধিকাংশই সক্রিয়।
যে কারণে শীতের অনুভূতি বেশি। শীতলতম মাস জানুয়ারি। তাই এই মাসে বর্তমানের চেয়েও বেশি শীত থাকতে পারে।
এদিকে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কুয়াশার প্রকোপ। ভোরে ও সন্ধ্যায় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির মতোও কুয়াশা পড়ছে বিভিন্ন এলাকায়। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। দিনের বেলা গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়েও বেশি দূরের জিনিস দেখা যাচ্ছে না।
বিএমডি বলছে, কুয়াশার প্রকোপ সোমবার (আজ) আরও বেড়ে যেতে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদর থাকতে পারে। এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএমডি জানিয়েছে, আগামী দু’দিন দিনের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
৫ দিনের মধ্যে দেশে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে শীতের প্রকোপ আরও বেড়ে যাবে। এদিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ধ্যা থেকে হালকা কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে এলাকা। এরপর রাতে নামে কনকনে শীত। দুপুর পর্যন্ত কুয়াশায় ঢাকা থাকে। সকাল ৯টার দিকেও হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হয়ে।
উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় কয়েকদিন ধরে ঠিকমতো সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারিভাবে গরম কাপড় ও কম্বল বিতরণ চলছে।
এছাড়া শীতে বিভিন্ন বয়সী মানুষের শীতজনিত নানা রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। হাসপাতালগুলোতে অসুস্থ রোগীর ভিড় বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে, শীতজনিত রোগ নিউমোনিয়া, জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বরসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।