ডেস্ক রিপোর্ট : শিক্ষকের কাছে নালিশ করায় ৯ বছরের শিশুকে বেদম পিটিয়ে মাদ্রাসা থেকে তাড়িয়ে দিলেন মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির ক্যাশিয়ার কালু। গত (১৩ জানুয়ারি) সোমবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা শহরের বাসর্টামিনালস্থ আমিনিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এঘটনা ঘটে। এঘটনার পর থেকে শিশুটি নিখোঁজ রয়েছে বলে মাদ্রাসার একাধিক ছাত্র জানিয়েছে। ভুক্তভোগি শিশু শফিকুল ইসলাম বুধহাটা গ্রামের আজিজুল ইসলামের পুত্র। জানা গেছে, ছেলেকে হাফেজ বানানোর উদ্দেশ্যে বিগত ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে আমিনিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করেন শফিকুলের পিতা। মাসিক ৬‘শ’ টাকা চুক্তিতে তাকে ভর্তি করা হয়। গত সোমবার সন্ধ্যায় মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডিং এর ক্যাশিয়ার রসুলপুর গ্রামের শফিকুর রহমানের পুত্র শহীদুল ইসলাম (কালু) মাসিক ৬‘শ’ টাকা বকেয়া পড়ে যায় শফিকুলের। একথাটি কালু তাদের বাবুর্চিকে বলে টাকা না দিলে ওকে বের করে দেয়া হবে। আমি এসে ব্যবস্থা নিচ্ছি। একথাটি ওই শিশু জানতে পেরে তার দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে জানায়। সে কথাটি কালু জানতে পারে। এরই জের ধরে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত হুজুর মাওঃ রেজাউল ইসলামের কাছ থেকে নিয়ে ৯ বছরের শিশু শফিকুল ইসলাম কে বেধড়ক মারপিট করে। এতে শিশুটি উপুড় হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। মাটি থেকে তুলে লোহার রেলিংয়ের সাথে ধাক্কা দেওয়া হয়। এভাবেই নির্যাতন করে মারপিট করা হয় ওই শিশু শফিকুল ইসলামকে। একটি দুধের শিশুর সাথে এ ধরনের আচরনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন প্রতিষ্ঠানের (শিক্ষক) হুজুর মাওঃ রেজাউল ইসলাম। ক্যাশিয়ার শহীদুল ইসলাম কালুর উগ্রতায় ভীতু হয়ে তিনিও নীরব ও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন বলে জানিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত (শিক্ষক) হুজুর মাওঃ রেজাউল ইসলাম ও শিক্ষার্থীরা। এব্যাপারে শিশু শফিকুলের পিতার কাছে তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এবিষয়ে ক্যাশিয়ার শহীদুল ইসলাম কালুর সাথে যোগাযোগ করার জন্য মঙ্গলবার রাত ৭ থেকে ৮ টার মধ্যে কয়েকবার তার ব্যবহৃত ০১৭১৩ ৯০৪৫৯০ ও ০১৭১২ ৮৫১৪৮৩ নাম্বারে ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন এঘটনায় দু:খ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, এবিষয়ে ওই রাতেই জরুরি মিটিং ডেকে কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম কালুকে বকাঝকা করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনা যাতে আর প্রতিষ্ঠানে না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
পূর্ববর্তী পোস্ট