বিদেশের খবর: করোনাভাইরাসের মধ্যে চীনে আটকে পড়া ৩৭০ জন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে আজ। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) একটি বিশেষ বিমান যাচ্ছে চীনে। রাতেই সেখান থেকে আটকে পড়া বাংলাদেশিকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে জানাবেন বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান জানিয়েছেন।
এদিকে, গতকাল বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের (বিডিএফ) সম্মেলনে উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। যে ৩৭০ জন বাংলাদেশি ফিরে আসছেন, তাঁদের জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে-এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। আর তাঁদের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই দায়িত্ব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। চীন সরকার বলেছে, যেসব বাংলাদেশি সেখানে থাকতে চান, তাঁদের সব ধরনের সেবা-খরচ চীন সরকারই বহন করবে। তবে আমরা তাঁদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের জানান, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকার পুরোপুরি প্রস্তুত। তিনি বলেন, ভাইরাসটি যেন দেশে না আসে তা নিয়ে আমরা সতর্ক আছি। যদি কোনো কারণে চলে আসে, তাহলেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। দেশের জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে আলাদা ওয়ার্ড খেলা হয়েছে। ঢাকাসহ সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে একই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক জানান, এখন থেকে পর্যায়ক্রমে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা সব ফ্লাইটের যাত্রীদেরই স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হবে। গত কয়েক দিন শুধু চীন থেকে আসা চারটি উড়োজাহাজের যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হয়েছিল। এখন থেকে তা সব যাত্রীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
এদিকে, গতকাল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ডা. মিলন হলে বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটির আয়োজনে নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবসংক্রান্ত জনসচেতনতামূলক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, এ মুহূর্তে স্ক্রিনিং ছাড়া কাউকেই দেশে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি স্ক্যানিং মেশিন রাখা আছে। এর একটি ভিআইপি প্রবেশদ্বারে, একটি সাধারণ প্রবেশদ্বারে এবং অন্যটি স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। একইভাবে দেশের অন্যান্য স্থল ও নৌবন্দরেও স্ক্রিনিং ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শাহজালাল বিমানবন্দরসংলগ্ন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একটি আলাদা আইসোলেটেড কেবিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিমানবন্দরে প্রতিটি যাত্রীর জন্য একটি করে করোনাভাইরাস নির্দেশিকা গাইড রাখা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমাদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। করোনাভাইরাস মোকাবেলা করতে সরকার পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। এ ছাড়া ডেঙ্গুর সময় আমাদের চিকিৎসকরা যেভাবে সফলতা দেখিয়েছেন, তা বিশ্বে বিরল।’