কে.এম রেজাউল করিম, দেবহাটা ব্যুরো ॥ দেবহাটায় ঘূর্নিঝড় আম্ফানের তান্ডবে সীমান্ত নদী ইছামতির ভেড়ীবাধের ভয়াবহ ভাঙ্গনে ৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বিপদের পুড়ে পড়েছেন। উপজেলার দক্ষিন নাংলা গ্রামের ইছামতি নদীর পূর্বে থেকে হুমকির ঝুকিতে থাকা ভেড়ীবাধটি আম্ফানের তান্ডবে ভেঙ্গে গেছে। এই ভাঙ্গনে দক্ষিন নাংলা, মাঝেরআটি, জোনাইপাড়া, মোল্লাপাড়া ও ছুটিপুর গ্রামের মানুষের জীবন একদিকে যেমন অচল হয়ে পড়েছে তেমনি অন্যদিকে তারা ছেলে মেয়ে, গবাদী পশুসহ জিনিষপত্র নিয়ে বিপদে রয়েছেন। কোথায় যাবেন আর কি করবেন এই নিয়ে তারা হতাশা আর নিরাশার মধ্যে পড়েছেন। এই ভাঙ্গনে পাশর্^বর্তী আরো কয়েকটি গ্রামের মানুষ গবাদি পশু, ঘের ও ফসলফলাদী নিয়ে বিপদের ঝুঁকিতে রয়েছেন। সহায় সম্পদ রক্ষার জন্য তাদের খাওয়া ঘুম প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়া আম্ফানের তান্ডবে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অসংখ্যা ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, গাছ গাছালির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কাচা ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গেছে, টিনের চালগুলো উড়ে গেছে, মৎস্য ঘেরগুলো পানির চাপে ডুবে গেছে আর প্রত্যেকটি রাস্তার উপরে গাছ গাছালি ভেঙ্গে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া মোবাইলের নেটওয়ার্ক ও বিদ্যুৎ বুধবার বিকাল থেকেই নেই। এতে করে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। ঝড়ের সময় রাত ১২ টার দিকে বসন্তপুর শ্লুইচগেটটি পানির চাপে ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হলে স্থানীয়রা চেষ্টা চালিয়ে শ্লুইচ গেটটি রক্ষা করে। তবে এতে শ্লুই গেট ও পাশের পিচের রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২ টার দিকে দেখা যায়, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সবুজ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মুজিবর রহমান ও মনিরুজ্জামান মনির নেতৃত্বে গ্রামবাসীরা ভেড়ীবাধ নিজেরা সংষ্কারে কাজ করছে। তবে যদি জোরে পানির চাপ বাড়ে তাহলে সেটাও রক্ষা হবেনা। তবে এখনো পর্যন্ত আম্ফনের কবলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানা যায়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর, কৃষি অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তরসহ সকল সেক্টরে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপনে কাজ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এমন একটি দূর্ঘটনা কবলিত এলাকায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যাননি বলে স্থানীয়রা জানান। তবে দেবহাটা থানার ওসি বিপ্লব কুমার সাহা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুজিবর রহমান ভেড়ীবাধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলে জানা গেছে। অবিলম্বে ভেড়ীবাধের পাশ দিয়ে একটি রিংবাধ দেয়ার জন্য এলাকাবাসী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তারা দাবী জানিয়েছেন। এছাড়া হুমকির মুখে থাকা বসন্তপুর এলাকার ভেড়ীবাধ, শিবনগর ও টাউনশ্রীপুর এলাকার ভেড়ীবাধগুলোর অবিলম্বে সংস্কার করার জন্য দাবী জানানো হয়েছে।