কালিগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ সুপার সাইক্লোন ঘুর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর ঘোলা ও ঝাঁপালী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ভেড়ীবাধ সংস্কারের কাজ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে শুরু হয়েছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী উদ্যোগে বুধবার ভোর থেকে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহনে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ঈদের পূর্বে ঘুর্ণিঝড় আম্পানে শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ উপজেলার ঘোলা ত্রিমহোনী ঝাঁপালী এলাকার ৪ স্থান দিয়ে ব্যাপক ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। নদী ভাঙ্গনে পানিতে কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পূর্ব কালিকাপুর গ্রামের ২৫০ পরিবারের ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, ক্ষেতের ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা শ্যামনগরের শত শত বিঘার মৎস্য ঘের, ১৫ গ্রামের ঘরবাড়ি, ক্ষেতের বিভিন্ন ফসল পানিতে তলিয়ে যেয়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসময় নিদারুণ কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করে গ্রাম বাসিরা। প্রথমে ভেঙ্গে যাওয়া এলাকার পানিতে পূর্ব কালিকাপুর টু জয়নগর পিচের রাস্তা উপচে কালিগঞ্জের বালিয়াডাঙ্গা এলাকায় পানি প্রবেশ করতে চাইলে বাঁশের খুটি পুতে ও বালির বস্তা ফেলে বাঁধ দেওয়ার চেষ্ঠা করে সফল হয়। সেখান থেকে কিছুর যেয়ে একই রাস্তায় আবারও পানির চাপে ভাঙ্গন সৃষ্টি হলে সেখানেও সেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ দেওয়ার কাজ শুরু হয়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান ঘোলা ও ঝাঁপালী এলাকার ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় বাঁধ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করেন। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভেঙ্গে যাওয়া ঘোলা ত্রিমোহনী ও ঝাপালী এলাকায় ভেড়িবাধ মেরামতের জন্য সকলকে আহবান জানান। এসময় তার নেতৃত্বে বুৃধবার ভোর ৫টা থেকে কালিকাপুর খেয়াঘাট থেকে ট্রলার যোগে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ছুটে আসেন। ভোর থেকে ঘোলা ও ঝাপালী এলাকায় হাজার হাজার মানুষ ভেড়ীবাধ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কারের কাজ করতে থাকে। একটানা দুপুর ১২ পর্যন্ত কাজ করলে জুয়ারের পানি উঠায় সকলকে দুপুরে খাওয়া ব্যবস্থা করেন। উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বলেন, ঘুণিঝড়ের তান্ডবে নদীর ভেড়িবাধ ভেঙ্গে পানিতে ভিটেবাড়ি ঘরদোর, মৎস্য ঘেরে পানি ঢুকে সাধারন মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। এর মধ্যে কিছু ধান্ধাবাজ এই ভাঙ্গন কবলিত এলাকা নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে। এসব আসাধারণ মানুষদের জঘন্ন হাস্যকর ফাজলামোতে নজর না দিয়ে এলাকার সাধারন মানুষদের সাথে নিয়ে ঝুড়ি কোদাল আর বস্তা নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গন কবলিত ভেড়িবাঁধের কাজ শুরু করেছি। এই কাজে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগসহ এলাকার হাজার মানুষ অংশ নেয়। সকলে যে ভাবে সাড়া দিয়েছে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা ভেঁড়ী বাঁধের কাজ দ্রুত শেষ করার আশা রাখছি। কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকলিমা খাতুনের কন্যা ও জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাফিয়া পারভীন জানান, ঘূণিঝড়ের তান্ডবে ঘোলা ও ঝাপালী এলাকার ভেড়িবাধ ভেঙ্গে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পূর্ব কালিকাপুর গ্রামের কয়েক‘শ পরিবারের ঘর বাড়ি, ক্ষেতে ফসল, পুকুরের মাছ, মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ২/৩ দিন এলাকার মানুষের সেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভেড়িবাধের কাজ শুরু করেছি। খোলপেটুয়া নদীর ঘোলা ও ঝাঁপালী এলাকার ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ভেড়িবাঁধ সংস্কারে উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় ৬/৭ হাজার মানুষ সেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ করছে। তাদেরকে দুপুরের খাওয়ার সকল ব্যবস্থা করেছি।
পূর্ববর্তী পোস্ট