অনলাইন ডেস্ক : সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার ঘটনাকে উপজীব্য করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল তদন্তকে বাধাগ্রস্ত করছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
অ্যাসোসিয়েশন জানায়, দুটি পেশাদার বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর এ অপচেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত।
বৃহস্পতিবার এক বিবিৃতিতে অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জের এসপি মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজার জেলার টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার বিষয়টি একটি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত ঘটনা। এ ঘটনায় সমগ্র দেশবাসীর মতো বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য অত্যন্ত দুঃখিত ও মর্মাহত। এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আইনি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মামলা রুজু হয়েছে এবং মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ও বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে, কোন ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলে, তার জন্য ব্যক্তিই দায়ী থাকবেন; প্রতিষ্ঠান দায় নেবে না। বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন উক্ত যৌথ প্রেস ব্রিফিং এর বক্তব্যকে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে সাধুবাদ জানাচ্ছে। এ ঘটনার দায়-দায়িত্ব নির্ধারণে প্রয়োজনীয় সর্বাত্মক আইনি ও প্রশাসনিক সহযোগিতা প্রদানে তাঁদের যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনকে গভীরভাবে আশান্বিত করেছে। বাংলাদেশ পুলিশ এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ এবং আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্বক ব্যবস্থা গ্রহণে অঙ্গীকারাবদ্ধ। অ্যাসোসিয়েশন বিশ্বাস করে যে, অতীতের ন্যায় বাংলাদেশ পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যকার বিদ্যমান আস্থা, বিশ্বাস এবং আন্তরিক ও শ্রদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ভবিষ্যতে তা আরো দৃঢ় ও সংহত হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গভীর বিস্ময় ও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, এ ঘটনাকে উপজীব্য করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং কিছু কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে ব্যবহার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নানামুখী অপপ্রচার চালিয়ে চলমান আইনি কার্যক্রমকে প্রভাবিত ও বাধাগ্রস্ত করার জন্য তৎপর রয়েছে। উদ্ভূত এ পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ দুটি পেশাদার বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর এ অপচেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ অশুভ চক্রের এ ধরণের ঢালাও নেতিবাচক প্রচার প্রচারণা সত্ত্বেও তাদের মনোবল অটুট রেখে তারা দেশ ও জাতির কল্যানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবেন। আমরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলতে চাই, বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি পূর্ণ আনুগত্যশীল থেকে সংবিধান ও মানবাধিকার সমুন্নত রেখে দেশ ও মানুষের কল্যাণে সর্বদা কাজ করে যাবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের আগামী দিনের পথ রচিত হবে সৌহার্দ্যে, সম্প্রীতি ও সহযোগিতায়। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা, সমবেত অংশগ্রহণ ও নতুন প্রত্যয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা একযোগে দেশ ও মানুষের কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব। অতীতের ন্যায় বর্তমান সময়েও স্বার্থান্বেষী মহল বিশেষের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে আইনের সঠিক প্রয়োগ এবং জনবান্ধব পুলিশি কার্যক্রম নিশ্চিতকল্পে এ দেশের মানুষ সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন প্রত্যাশা করে।