কালিগঞ্জ প্রতিনিধি॥ কালিগঞ্জে বহুল আলোচিত আবিদ হোসেন মোল্লা ওরফে বাবু হত্যাকান্ডে আসামিদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের সন্ত্রাসী নুরুল বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট ভুক্তভোগিদের আয়োজনে বন্ধকাটি গ্রামের রসুলের মোড় রাস্তার উপর শত শত গ্রামবাসি, ইউপি সদস্য, গ্রাম পুলিশ, ভূক্তভোগির পরিবার বাবু হত্যা মামলার আসামিদের আটক ও তাদের ফাঁসির দাবিতে ঘন্টাব্যাপি এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল হক সরদার, ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান সরদার, নিহত বাবু‘র পিতা আব্দুর রহিম মোল্যা, খালা আকলিমা খাতুন, ফাইমা খাতুন ও তার ভাই আল মামুন প্রমুখ। এসময় বক্তারা বলেন, নূরুল বাহিনী বাবুকে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। থানা পুলিশ ইতিমধ্যে হত্যা মামলার আসামি সাবিনা ও আরিফকে আটক করেছে। এ হত্যাকান্ডে নেতৃত্বদানকারী কুখ্যাত নুরুলসহ অন্যান্য আসামিরা নেপথ্যে থেকে মামলা তুলে না নিলে খুন ও গুমের হুমকী দিচ্ছে। পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে রাতের আধাঁরে খুনী নুরুল ও তার সহযোগিত ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছি। বাবু হত্যার রাতে নুরুলের বাড়িতে নৈশভোজে জাহাঙ্গীর, নুরুল, ভঞ্জুর, আরিফ ও ওয়াহাব আলীসহ ১০/১২ জনের সন্ত্রাসী দল মিলিত হয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। সে কারণে এলাকার মানুষ নিরাপত্তহী ও ভীতসন্ত্রস্ত। এই বাহিনী প্রভাবশীদের ছত্র-ছায়ায় দীর্ঘ যাবৎ অন্যের ঘের দখল, লুটপাট, জমি দখল, এসিড নিক্ষেপ, ঘরে আগুন দেওয়াসহ নানা ধরনের অপকর্ম চালিয়ে আসছে। এই বাহিনীর প্রধান ডাকাত নুরুল ২০০০ সালে দিনে দুপুরে বন্দকাটি গ্রামের রশিদকে হত্যা করে ভারতের বশিরহাট জেলার স্বরুপনগর থানার বিটারী বর্ষ্টমতলা গ্রামে পালিয়ে যেয়ে নিজের মান মিয়াজ দালাল, পিতা আকছেদ দালাল পরিচয় দিয়ে বসাবস শুরু করে। সেখানেও হত্যা মামলাসহ ৬/৭টি মামলায় জড়িয়ে পূনঃরায় দেশে ফিরে আবারও হত্যাসহ নানা ধরণের অপরাধ কর্মকান্ড করতে থাকে। প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর সকালে উপজেলার বন্দকাটি গ্রামে শ্বশুর বাড়ি পুকুরের পাড়ে লেবু গাছের ডালে গলায় ওড়না জড়ানো ঝুলান্ত অবস্থায় আবীদ হোসেন মোল্লা ওরফে বাবুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। বাবু’র পায়ের নখ রক্তাক্ত ছিল। ডান পায়ের হাঁটুর উপর ভারী জিনিস দিয়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনায় বাবুর মা হোসনে আরা বেগম বাদি হয়ে সাবিনা ও আরিফ হোসেনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ৩ নভেম্বর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ৩ নভেম্বও দুপুরে সাবিনাকে ও রাতে মাগুরা জেলার শালিখা থানাধীন হাজরাহাটি তদন্ত কেন্দ্র থেকে পুলিশ সদস্য আরিফকে আটক করে। সাবিনা ৪ নভেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ৫ নভেম্বর আরিফকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। ৬ নভেম্বর আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। ১০ নভেম্বর সাতক্ষীরার আমলী আদালত-২এর বিচারক ইয়াসমিন নাহার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।