রাজধানীর বনানীর আলোচিত ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে অভিযান চালাচ্ছেন শুল্ক গোয়েন্দারা। হোটেলের একটি কক্ষ থেকে ১০ বোতল মদ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে শুল্ক গোয়েন্দারা ওই হোটেলে অভিযান শুরু করেন।
গত ২৮ মার্চ ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে ৬ মে বনানী থানায় মামলা হয়।
শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান বলেন, রেইনট্রি হোটেলে অভিযান চলছে। অভিযান চলাকালে হোটেলের একটি কক্ষে ১০ বোতল মদ পাওয়া গেছে। অন্য কক্ষগুলোতেও তল্লাশি চালানো হবে। অবৈধ কোনো কিছু পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল শনিবার হোটেলের এক্সিকিউটিভ ইন্টারনাল অপারেটর ফারজান আরা রিমি বলেছিলেন, হোটেলে মদ বিক্রির লাইসেন্স নেই।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দল গতকাল হোটেল রেইনট্রি পরিদর্শন করে। কমিশন প্রাথমিকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে।
ধর্ষণ মামলার পাঁচ আসামির মধ্যে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ ও রেগনাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ গত বৃহস্পতিবার সিলেটে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁদের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, শাফাত ও সাদমান তাঁদের জড়িত থাকার কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন।
মামলার অন্য তিন আসামি এখনো পলাতক। পলাতক তিন আসামি হলেন ইমেকার্স ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মের স্বত্বাধিকারী নাঈম আশরাফ, শাফাত আহমেদের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ।
ধর্ষণের শিকার দুই ছাত্রী বৃহস্পতিবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে দুই ছাত্রী জানান, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিয়ে তাঁদের নেওয়া হয়। শাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাঁদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডের দ্য রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে দুজনই জানতেন না সেখানে পার্টি হবে। এ সময় তাঁদের সঙ্গে শাহরিয়ার নামের এক বন্ধু ছিলেন। তাঁদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। হোটেলে যাওয়ার পর শাফাত ও নাঈমের সঙ্গে তাঁরা আরও দুই তরুণীকে দেখেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় শাহরিয়ারসহ দুই তরুণী চলে আসতে চেয়েছিলেন। তখন আসামিরা শাহরিয়ারের কাছ থেকে গাড়ির চাবি নিয়ে নেন এবং তাঁকে মারধর করেন। এরপর দুই তরুণীকে অস্ত্রের মুখে একটি কক্ষে নিয়ে যান। ধর্ষণ করার সময় শাফাত গাড়িচালককে ভিডিও চিত্র ধারণ করতে বলেন। আর নাঈম তাঁদের মারধর করেন। তাঁরা এ ঘটনা জানিয়ে দেবেন বলে জানানোর পর শাফাত তাঁর দেহরক্ষীকে ওই দুই তরুণীর বাসায় তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঠান। লোকলজ্জার ভয় এবং মানসিকভাবে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন আসামিরা। তাঁদের কথামতো না চললে বা এ ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।