অনলাইন ডেস্ক : প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা অনেক বেশিই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন, আবার অনেকে অপরাধ থেকে নিজেদের বাঁচাতে নানাভাবে তদবির করছেন। এই অভিযোগ খোদ জনপ্রশাসন সচিবের। তিনি বলছেন অধিকাংশ কর্মকর্তাই ঢাকায় থাকার জন্য তদবির করেন, যা পীড়াদায়ক।
ঢাকার সেগুনবাগিচায় বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে ২০২০ সালের সামগ্রিক কর্মদক্ষতায় বিবেচনা জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা স্বীকৃতি প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসন সচিব মো: শেখ ইউসুফ হারুন। বক্তব্যের এক পর্যায়ে কথা বলেন মাঠ পর্যায়ের সহকর্মীদের ব্যাপারে আসা নানা অভিযোগ নিয়ে।
তিনি জানান, ‘আমাদের কর্মকর্তাদের অপরাধ প্রবণতা এখন এতো বেশি, প্রতিদিন আমাকে কয়েকটি বিভাগীয় মোকদ্দমা শুনতে হয়। এবং মোকদ্দমায় অনেকের শাস্তি হচ্ছে। আমি হঠাৎ দেখলাম যে, পেকুয়ার ইউএনও তার ওইখানে একটা ঘটনা ঘটলো। তার সঙ্গে ইউএনওর কোন বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই, তিনি একাত্তরে বক্তৃতা দিতেন। একটা প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারলেন না। আমি ওই অনুষ্ঠান দেখে লজ্জিত, আমার একজন ইউএনও, একাত্তরের মত টেলিভিশনে গেলো কিন্তু একটি প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারলেন না।’
বদলি হতে বা বদলি ঠেকাতে তদবির করা হয় যা খুবই বিব্রতকর জানিয়ে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, ‘স্যার আমা ঢাকায় পোস্টিং দরকার। জানতে চাইলাম কেন। বললো, আমি তো ওই ব্যাচের সভাপতি। আমার ব্যাচের অনেক কাজকর্ম করতে হয়। এজন্য তার ঢাকা আসা প্রয়োজন। আরেকজন কর্মকর্তা ফেসবুকে পোস্ট দেন, অমুক ব্যাচের কর্মকর্তা তো এতদিন এসিল্যান্ড ছিলেন, আমরা কেন এক বছর পর এসিল্যান্ড থেকে প্রত্যাহার হব। কারণ তার খাওয়াটি কম হয়েছে। এক বছরে খাওয়া হয়নি, আরো যদি দুই বছর খেতে পারতেন তাহলে উনার পেটটি ভরতো।’
কোন কাজ করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি বা পোস্ট দেয়া নিয়েও সহকর্মীদের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন জনপ্রশাসন সচিব। মো: শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘ভূমি অফিস পরিদর্শন করলাম, এটি ফেসবুকে দেয়ার কি হলো। এমন একটি ভাব ইউনিয়ন ভূমি অফিস কেবল তিনি পরিদর্শন করেছেন। তার আগে কোন কর্মকর্তা জীবনে কোনদিন এটা পরিদর্শন করেননি। ওই কর্মকর্তা ভালো গান গাইতে পারেন। তিনি গান গেয়ে ফেসবুকে দিলেন। কেন?’
অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। পরে ২০২০ সালের সামগ্রিক কর্মদক্ষতায় বিবেচনায় জেলা পর্যায়ে ঢাকা বিভাগীয় ১৪ এসিল্যান্ড ও ১৩ জন ইউএনওকে শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।